অবশেষে অবস্থান বদল, শর্তসাপেক্ষে পৌষ মেলায় রাজি বিশ্বভারতী

অবশেষে অবস্থান বদল, শর্তসাপেক্ষে পৌষ মেলায় রাজি বিশ্বভারতী

বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেলার মাঠে পাঁচিল তোরাকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া তাণ্ডব দিয়েছে গোটা বাংলা৷ মেলার আয়োজন নিয়ে মামলা মোকদ্দমা থেকে শুরু করে পাঁচিল নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিতর্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা৷ দীর্ঘ বিতর্ক, টালবাহানার পর অবশেষে পৌষ মেলা আয়োজনে শর্তসাপেক্ষে রাজি হওয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷

প্রশাসন ও কেন্দ্র সহযোগিতা করলে নিয়ম মেনে পৌষ মেলা আয়োজনে রাজি হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ কেন্দ্র সাহায্য করলে পৌষ মেলা করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷ ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ বিকেলে প্রেস বিবৃতি জারি করে পৌষ মেলা করার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে৷ তবে মেলার মাঠে পাঁচিল নির্মাণে অনড়  বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷

প্রেস বিবৃতি জারি করে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘পৌষ মেলা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে তা একেবারেই অযৌক্তিক৷ পৌষ মেলা যে বাঙালির আবেগে একটা বিশেষ স্থান করে নিয়েছে তা আমরা কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারি না৷ যদি কর্মসমিতির রেজুলেশন ঠিকমত পড়া যায় তবে, এটা পরিষ্কার যে বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা কখনও বন্ধ করতে চাই না৷ কারণ এই মেলা করতে অর্থনৈতিক ও লোকবল আমাদের নেই৷ এছাড়া জাতীয় পরিবেশ আদালতের নিয়মাবলী রয়েছে৷ কেননা মেলা চারদিন পর বন্ধ করে দিতে হবে৷ ৬ দিনের মধ্যে মেলারমাঠ আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে৷ আমরা পেরেছিলাম দিন-রাত পরিশ্রম করে৷ আমাদের সহকর্মীরা অনেকেই এগিয়ে এসে মেলারমাঠ পরিষ্কার করেছেন৷ এতটা করার পরেও রাজ্য পরিবেশ দফতর বিশ্বভারতীকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে৷ ফলে, মেলা আয়োজন করতে গেলে কেন্দ্র ও প্রশাসন সহযোগিতা করলে মেলা সম্ভব৷’’

যদিও এর আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তারা পৌষ মেলা আয়োজন করতে পারছে না৷ মেলা হলে বহু অপকর্ম হয় বলেও তোলা হয় অভিযোগ৷ বিশ্বভারতীর এই অভিযোগের পক্ষে ইতিমধ্যেই সওয়াল করেছেন বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল৷ তিনি জানিয়েছেন, ন্যশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ মেনেই এই পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে এই পৌষ মেলাকে কেন্দ্র করে পরিবেশ দূষণের কারণে রাজ্য সরকারের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনাল এনিয়ে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে মামলাও করেছে।  পাশাপাশি উপাচার্যর বক্তব্যের সুরে সুর মিলিয়ে  তিনিও বলেন বিশ্বভারতীর উন্মুক্ত মেলাপ্রাঙ্গণে রীতিমতো বেআইনি, অসামাজিক কাজকর্ম চলে। সেক্স ব়্যাকেট থেকে শুরু করে মদ,গাঁজার অবাধ কারবার এখানে। তিনি আরও উল্লেখ করেন পৌষমেলা ঘিরে রাজ্যের শাসকদলের নেতাকর্মীদের মোটা টাকা মুনাফা হয় তাই এই পাঁচিল তৈরি করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 2 =