কলকাতা: চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে তারপর রাজ্য রাজনীতির উত্তাপের পারদ তুঙ্গে। এখনো পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি তরজা চলছে। নির্বাচন কমিশন এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আসতে না পারলেও প্রাথমিক তথ্য যা সামনে এসেছে তাতে সন্দেহ রয়েছে অনেক। বিজেপি নিশানা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, দাবি করা হয়েছে যে তাঁর উস্কানি মূলক মন্তব্যের জন্য এই ঘটনা। অন্যদিকে শাসক শিবির বিজেপির দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে সম্প্রতি সেই দিনের সেই নির্দিষ্ট বুথের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে বাহিনীর ওপর হামলা তো দূর, কোনরকম ঘেরাও ছাড়াই হঠাৎ গুলি চালায় সিআইএসএফ! যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল।
শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, ৩০০-৪০০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করে এবং বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তী ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার স্বার্থে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কোচবিহারের প্রশাসন এই একই দাবি করেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই একই দাবি করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন। তবে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কেউ ঘেরাও করেনি এবং সেই বুথে ওই সময় ৩০০ কেন, ১০০ লোক ছিল না। অনেক ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল ভোট দেওয়ার জন্য এবং বেশ কয়েকজন হাতে লাঠি নিয়ে ঘুরছিল। ভিডিওর প্রায় ৪ মিনিটে প্রথম গুলি চালানোর আওয়াজ শোনা যায়, পরবর্তী ক্ষেত্রে হৈ হৈ পড়ে যায় বুথ এলাকা জুড়ে। অতএব এই ভিডিওতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে কোনরকম প্ররোচনা বা উস্কানি ছাড়াই গুলি চালানো হয়েছে। তবে ভোটাররা ওইভাবে কেন লাঠি নিয়ে ঘুরছিল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ঘটনাচক্রে, এর আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে জানায় যে সেইদিন ওই বুথের কিছু দূরে এক ১৪ বছরের ছেলেকে মারধর করে সিআইএসএফ-এর এক জওয়ান। সেই ঘটনার প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা এক জায়গায় জড়ো হন এবং প্রতিবাদ জানান। সেই প্রেক্ষিতেই হয়তো স্থানীয় কিছু মানুষ লাঠি নিয়ে ঘুরে ছিলেন এমন তবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে বিজেপি যে ‘আত্মরক্ষার জন্য গুলি করার’ তথ্য সামনে এনেছে তা এই ভিডিও দেখার পর মানতে একেবারেই নারাজ বিরোধী পক্ষ। তাদের তরফে দাবি করা হচ্ছে, এইভাবে একতরফা মন্তব্য করে বিজেপি বাংলায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও এই ভিডিও নিয়ে এখনো পর্যন্ত রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়নি।