এই প্রথম রাজ্যে শুরু হল এইচআইভি পসিটিভদের টিকাকরণ

এই প্রথম রাজ্যে শুরু হল এইচআইভি পসিটিভদের টিকাকরণ

বারাসত: তথাকথিত আইনের বেড়াজাল ভেঙে বেরোতে চান তাঁরা। সমীর বিশ্বাস, মাধবী অধিকারী, সুব্রত বিশ্বাস, মানসী নাগ, গৌতম মুহুরী – এঁদের কেউ ছাব্বিশ বছর কেউ বা কুড়ি বছর ধরে, কেউ অতি সম্প্রতি এইচআইভি পজিটিভ আক্রান্ত হয়ে জীবন সংগ্রামেরত। কিন্তু তাঁরা আর নিজেদের নাম গোপন রাখতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, -রাজ্যে প্রথম বারাসত হাসপাতালে এইচআইভি পজিটিভ মানুষদের কোভিড ভ্যাকসিন বা টিকাকরণের পরে তাঁরা নিজেদের মুখ দেখিয়ে জানাতে চান তাঁরা আর একঘরে থাকতে রাজি নন।

কোভিড ভ্যাকসিন যখন থেকে  ভারতে দেওয়া চালু হয় তখন থেকেই তাঁরা নিজেদের কোভিড টিকাকরণের জন্য ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন। এইডস আক্রান্ত মানুষদের এক ছাতার তলায় এনেছেন তেমনই এক এইচআইভি পজিটিভ আক্রান্ত সমীর বিশ্বাস জানিয়েছেন, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলাতে ১৩ হাজার মানুষ এইচআইভি পসিটিভ থাকলেও তাঁরা একজোট করতে পেরেছেন প্রায় সাড়ে তিনহাজার মানুষকে। এদের মধ্যে ৪৬১ জন নাবালক, নাবালিকা। বাকি যে ৩০৮৬ জন তাঁদের টিকাকরণের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর, উত্তর চব্বিশ পরগণার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং বারাসাত জেলা সদর হাসপাতালের কথা বলতে শুরু করেন।

তাঁদের চেষ্টা বাস্তবায়িত করতে বিশেষ ভূমিকা নেন বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল। স্থির হয় দফায় দফায় দুশো জন করে জেলার সমস্ত এইচআইভি পজিটিভ মানুষকে টিকাকরণের কাজ হবে। সোমবার শুরু হয়ে গেল সেই টিকাকরণের কাজ। সমীর বিশ্বাস ও মাধবী অধিকারী জানালেন, সংগঠিত ভাবে রাজ্যে এই প্রথম একসাথে এইচআইভি পজিটিভ  মানুষকে কোভিড টিকাকরণ করা হচ্ছে।

তাঁদের বক্তব্য এ বিষয়ে পথিকৃৎ বারাসত হাসপাতাল যেখানের কর্মসূচী সামগ্রিক ভাবে দেশ ও রাজ্যের মধ্যে আদৰ্শ হয়ে উঠবে। সুপার সুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরা সামগ্রিক বিষয়টি মানবিক ভাবে দেখছেন। একদিকে নিজেদের মুখ না ঢেকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে সমীর বিশ্বাস ও তার একই ধারার আক্রান্ত মানুষরা বার্তা রাখছেন ব্রাত্য আর তাঁরা থাকবেন না। পাশাপাশি সমাজের মুল স্রোতে ফিরতে আগ্রহী এইচআইভি পজিটিভ মানুষদের টিকাকরণকে সাফল্যমন্ডিত করে সমাজকে এক অনন্য বার্তা দিল বারাসত হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *