কলকাতা: দীর্ঘ সাত বছর প্রতীক্ষার পরও চাকরি পাননি আপার প্রাইমারির প্রার্থীরা৷ অবশেষে প্রশাসনিক প্রধানের পরামর্শ অনুযায়ী চপ-পকোড়ার দোকান খুললেন আপার প্রাইমারির প্রার্থী শ্যামল শঙ্কর৷ চপের দোকান উদ্বোধন করার পর তিনি বলেন, ‘‘চপ শিল্পের উদ্বোধন করলাম৷ ডেডিকেট করলাম মাননীয় দিদিকে৷ আমার পরিচয়টা কি দিতে হবে?’’
আরও পড়ুন- বহু প্রতীক্ষিত IBPS PO পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি, আজ থেকেই করা যাবে আবেদন
শ্যামল শঙ্করের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়ায়৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি৷ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে এমএ, বি.এড, ডি.এল.এড-এর ডিগ্রি৷ পাশ করেছেন প্রাইমারি টেট৷ দু’বার এসএসসি টেট পাশ ও দু’বার প্রাইমারি ইন্টারভিউ দিয়েছেন৷ পিএসসি ক্লার্ক সহ আরও কিছু সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি পাশ করলেও চাকরি হয়নি৷ জানা গিয়েছে, ৪-৫ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে তাঁর৷ শ্যামল শঙ্কর বলেন, ‘‘খুচরো ও পাইকারি ডিম বিক্রি করে, কখনও আদা, পেঁয়াজ, রসুন বিক্রি করে সংসার চলছে৷ দিদি যদি রোজ এর দাম না পাই, তাহলে বাকি ভর্তুকিটা দেবেন৷’’
আরও পড়ুন- প্রকাশিত হল UPSC সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল, প্রথম প্রদীপ সিং
সম্প্রতি চপের দোকান খুলেছেন শ্যামলবাবু৷ তিনি জানান, প্রথম দিন ২০৫ টাকার চপ পকোড়া বিক্রি করেছেন তিনি৷ খরচ হয়েছে ১২০ টাকা৷ অর্থাৎ লাভ ৮৫ টাকা৷ হিসেবের অঙ্ক কষার পর তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দিদি চপ বিক্রি করে চলবে কি করে?’’ চাকরি না পেয়ে শ্যামল শঙ্করের মতো করুন অবস্থা বহু প্রার্থীর৷ অভিযোগ, দীর্ঘ সাত বছর ধরে সরকারের বঞ্চনার শিকার আপার প্রার্থীরা আজ কেউ সবজি বিক্রেতা, কেই বা বসেছেন চপ-সিঙ্গারার দোকান খুলে, কেউ আবার বেছে নিয়েছেন অন্য কোনও পেশা৷
আরও পড়ুন- বহু শতকের ভাঙা-গড়ার খেলা থেকে মুক্ত শ্রীরাম, আজ স্বর্ণযুগের সূচনা: মোদী
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সাত বছর ধরেও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। প্রথম ফর্ম ফিলাপ হয় ২০১৪ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে। টেট পরীক্ষা হয় ১৬ অগাষ্ট, ২০১৫ সালে। টেট রেজাল্ট বের হয় ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ -তে। ইন্টারভিউ শুরু হয় জুলাই ২০১৯-এ। আদালতের নির্দেশে প্রভিশনাল মেরিট লিস্ট বের হয় গত বছর ৪ অক্টোবর৷ কিন্তু এরপর দীর্ঘ সাত মাস কেটে গেলেও, নিয়োগ করা হয়নি তাঁদের৷