আছে দু’তলা ভবন, কিন্তু নেই পড়ুয়া! জঙ্গলমহলে বন্ধ একাধিক স্কুল

আছে দু’তলা ভবন, কিন্তু নেই পড়ুয়া! জঙ্গলমহলে বন্ধ একাধিক স্কুল

 

বাঁকুড়া: পড়ুয়া নেই৷ তাই আপাতত ‘বন্ধ’ হয়ে গেল জঙ্গল মহল বাঁকুড়ার দু’টি স্কুল। সূত্রের খবর, বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকার ইন্দাসের বেলবান্দি জুনিয়র হাই স্কুল ও সারেঙ্গার  নেতুরপুর গার্লস জুনিয়র হাই স্কুল এই তালিকায় রয়েছে।

এবিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, ছাত্র ছাত্রীর অভাবে বেলবান্দি ও নেতুরপুর এই দুই জুনিয়র হাই স্কুল আপাতত বন্ধ আছে। বেলবান্দি জুনিয়র হাই স্কুলের দু’জন স্থায়ী শিক্ষককে বিষ্ণুপুরের খড়িকাশুলী জুনিয়র হাই স্কুলে বদলি করা হয়েছে। নেতুরপুর গার্লস জুনিয়র হাই স্কুলের একজন শিক্ষক ছিলেন৷ তাঁকে ‘শিক্ষক শূন্য’ চুয়াগাড়া জুনিয়র হাই স্কুলে বদলি করা হয়েছে। তবে কোন স্কুলের সরকারি অনুমোদন বাতিল হয়নি৷ আগামী দিনে ছাত্র ছাত্রী পাওয়া গেলে ‘অতিথি শিক্ষক’ দিয়ে ওই স্কুল দু’টি চালানো হবে৷

তবে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের বক্তব্য মানতে রাজি নন সংশ্লিষ্ট এলাকার ছাত্র ছাত্রী থেকে অভিভাবকেরা৷ ইন্দাসের বেলবান্দি এলাকার দশম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল শেখ বলেন, ‘‘আগে আমরা বেলবান্দি জুনিয়র হাই স্কুলে পড়তাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোন শিক্ষক ছিলেন না। তাই গ্রামের সব ছাত্র ছাত্রী প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের আউশনাড়া হাই স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছি৷’’ অভিভাবক আনারুল ইসলামের দাবি, দু’জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে দিয়ে স্কুলের পঠন পাঠন শুরু হয়েছিল। পরে একজন শিক্ষিকা এখানে কাজে যোগ দেন। পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে বাধ্য হয়েই তাঁরা তিন কিলোমিটার দূরের এক স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করতে বাধ্য হয়েছেন বলে তিনি জানান।

আছে দু’তলা ভবন, কিন্তু নেই পড়ুয়া! জঙ্গলমহলে বন্ধ একাধিক স্কুল

বাম সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক সুকুমার পাইনেরও দাবি, ছাত্র ছাত্রী নয়, শিক্ষকের অভাবেই ‘নিউ সেট আপ’ স্কুল গুলি বন্ধ হচ্ছে। তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষক সেলের বাঁকুড়া জেলা নেতা গৌতম দাশের দাবি, বিগত বাম আমলে কিছু মানুষকে ‘অনৈতিক সুবিধা দিতে যেখানে সেখানে স্কুল তৈরি করেছিল’। ফলে ছাত্র সংখ্যার অভাবে ওই স্কুল গুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণভাবে নিয়ম তিন কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল থাকার কথা, কিন্তু এক কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল হলে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ‘শূন্য’ হবেই। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের নিরিখে স্কুল তুলে ফেলার ঘটনায় অবশ্য স্থানীয় মহলে তৈরি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *