সংসারে অনটন, দেশের হয়ে খেলায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত দুই খুদের

সংসারে অনটন, দেশের হয়ে খেলায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত দুই খুদের

বারাসত: জেলা ও রাজ্যের প্রাথমিক স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলিতে কৃতী সন্মান অর্জন করার পর ডাক পেয়েছে দেশের হয়ে বিশেষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের৷ কিন্তু চরম দারিদ্র ও আর্থিক অনটনের জেরে জাতীয় ক্রীড়ার মার্শাল আর্ট বিভাগে অংশগ্রহন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির দুই খুদের।

‘রুরাল এমেচার গেমসে’র উদ্যোগে আগামী মাসের শুরুতেই গোয়াতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জাতীয় স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতাটি ভারত সরকারের ‘মিনিস্ট্রি অফ কর্পোরেট এফেয়ার্স’ বিভাগ দ্বারা স্বীকৃত। এই খেলায় দেশের বিভিন্ন রাজ্যের থেকে বাছাই করা প্রতিযোগিরা অংশগ্রহণ করবে। নৈহাটি থেকে সেরা ১০ জন প্রতিযোগী এবছর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলেছেন। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে দুই জন খুদে শিশু- স্বর্নজিৎ রায় (৭) ও সঞ্জিত রায় (১০) অর্থাভাবের কারণে এই খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না।

নৈহাটি মিত্র পাড়ার বাসিন্দা স্বর্ণজিৎ ও সঞ্জিত দুই ভাই। স্বর্ণজিৎ নৈহাটি মিউনিসিপাল স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র৷ সঞ্জিত নৈহাটি মাহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্যারাটেতে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তারা। জেলা তথা রাজ্য লেবেলের খেলাতে তারা বহু সংস্থার থেকে কৃতী সন্মান অর্জন করেছে। বর্তমানে সঞ্জিৎ গ্রিন, ইয়ালো, অরেঞ্জ, রেড বেল্ট প্রাপ্ত। সারাদিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দুই ভাই অনুশীলন করে থাকে। তাঁদের বাবা ইন্দ্রজিৎ রায় উত্তরবঙ্গে বৈদ্যুতিন মিস্ত্রির কাজ করে কোনও রকমের সংসার টেনে চলেছেন। মা সঙ্গীতাদেবী গৃহকত্রী। অতিমারীর সময়ে দিন আনতে পান্তা ফুরোনো অবস্থায় কোনওভাবে জীবন যাপন করছেন তাঁরা।

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে গোয়াতে এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এমাসের ১৫ই অগাস্ট প্রতিযোগিতায় নাম নথিভুক্তকরণের শেষ দিন। নাম নথিভুক্ত করতে প্রতিযোগী পিছু পাঁচ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে৷ এর পরেও যাতায়াত ও থাকা-খাওয়া বাবদ আরও বেশ কয়েক হাজার প্রয়োজন। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে তাই প্রবল দুশ্চিন্তাগ্রস্ত সঙ্গীতাদেবী। তিনি সকলের কাছেই জানাচ্ছেন সাহায্যের আর্জি৷ বিষয়টি জানতে পারার পর যথাযথ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন নৈহাটি পৌরসভার পৌরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *