কলকাতা: শনিবার চতুর্থ দফার বিধানসভা নির্বাচনের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা এই মুহূর্তে তুঙ্গে। এবার শীতলকুচি কান্দে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জোড়া জনস্বার্থ মামলা। কী ভাবে গুলি চলেছে, সেই ব্যাপারে তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রবি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী ফেরদৌস শামীম৷
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণাণের ডিভিশন বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে৷ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শীতলকুচিকাণ্ডে যে চারজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে সেই ঘটনায় হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করা হয়েছে৷ পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে মামলাকারী পক্ষ থেকে৷ শীতলকুচিতে যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা গুলি চালিয়েছেন, তাদের সকলকে যাতে নির্বাচন থেকে অব্যাহতি রাখা হয় সেই আবেদন জানানো হয়েছে৷ আইনজীবী ফিরদৌস শামীম তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে শীতলকুচি ঘটনার তদন্ত করা হোক৷
কলকাতা হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে কিভাবে গুলি চললো তার সঠিক তদন্তের দাবি একদিকে যেমন জানানো হয়েছে, অন্যদিকে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে হাইকোর্টে। মামলাকারীকে তরফের স্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে জানানো হয়েছে, গুলি চালানোর ঘটনা কীভাবে ঘটল তার প্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত দরকার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে কোম্পানি এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। আপাতত জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকেই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হবে। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই মামলায় কী রায় জানানো হয় তার দিকে নজর থাকবে সকলের।
এদিকে শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কিত মন্তব্য করতে শুরু করে দিয়েছেন বিজেপির নেতারা। দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে রাহুল সিনহা এবং সায়ন্তন বসু ইতিমধ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি যেমন একদিকে বলেছেন যে বেশি বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে, অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা মন্তব্য করেছেন যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উচিত ছিল আরও চার জনকে গুলি করা। এদিকে বিজেপির নেতাদের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ধরনের নেতাদের এবং এই ধরনের দলকে নিষিদ্ধ করা উচিত। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে শীতলকুচির ঘটনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে হয়েছে এবং পুরো ব্যাপারটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানেন। উল্টে প্রধানমন্ত্রী আবার দাবি করেছেন, শীতলকুচির ঘটনা মমতার মাস্টার প্ল্যান।