বসিরহাট: বিয়ের সময় সাধ্যমত যৌতুক দেওয়া হয়েছিল৷ তাতেই খিদে মেটেনি জামাইয়ের৷ তারই জেরে জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বধূর ওপর লাগাতার নির্যাতন করছিল বলে অভিযোগ৷ প্রতিবাদে রুখে দাঁড়াতেই বধূকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে৷ ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া থানার নাগরপুর গ্রামে৷
মৃত বধুর নাম রোকেয়া খাতুন৷ তাঁর মা আলেয়া বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে জামাই হাফিজুল মণ্ডল, শাশুড়ি ফজিলা সহ চারজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যে নিহত বধূর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ আলেয়া বিবির অভিযোগ, ‘‘তাঁর মেয়েকে পরিকল্পনা করে শ্বাসরোধ করে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।’’ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ৷
জানা গিয়েছে, ৬ বছর আগে হাসনাবাদ থানার আমলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢোলটুকারি রোকেয়া খাতুনের বিয়ে হয় বাদুড়িয়া নাগরপুরের চাষি হাফিজুল মণ্ডলের সঙ্গে৷ সেই সময় সাধ্যমত মোটরবাইক, আসবাবপত্র, সোনার গহনা সহ নগদ অর্থ দিয়েছিলেন মেয়ের পরিবার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে স্বামীর চাহিদা আরও বেড়ে যায়৷ কিন্তু অভাবী রোকেয়ার বাবার সামর্থ্য ছিল না বাড়তি চাহিদা মেটানোর৷ কারণ, নুন আনতে পান্তে ফুরানো সংসারে ঠিক করে দুবেলা অন্ন জোটে না৷
অভিযোগ, তবু নিজের দাবিতে অনড় থাকে জামাই৷ এই নিয়ে একাধিকবার বচসা, গন্ডগোল, ঝামেলা৷ এমনকি এবিষয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসেছিল৷ কিন্তু মেলেনি সমাধানসূত্র৷ উল্টে বধূর ওপর শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি ননদের বিরুদ্ধে৷ অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন বধূ। পরে অবশ্য বধূকে ফের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁর স্বামী৷ সম্প্রতি নতুন একটি মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে গণ্ডগোল থেকে বচসা এবং মারধর করা হয় বলে অভিযোগ৷ তারই জেরে শুক্রবার রাতে অশান্তির কথা বাপের বাড়ির লোকজনদের জানায় বধূ। তারপরই শনিবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন বধূ নাকি আত্মঘাতী হয়েছেন৷