শুভেন্দুর পদত্যাগের পর বিদ্রোহের সুর আরেক বিধায়কের গলায়, দলবদলের ইঙ্গিত!

শুভেন্দুর পদত্যাগের পর বিদ্রোহের সুর আরেক বিধায়কের গলায়, দলবদলের ইঙ্গিত!

দঃ ২৪ পরগনা: মন্ত্রীত্ব পদ থেকে শুভেন্দুর ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল৷ কবে তিনি দল ছেড়ে দেয় রয়েছে সেই আশঙ্কাও৷ এদিকে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামীও দল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে৷ একুশের নির্বাচনের আগে এভাবেই এক এক করে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে তৃণমূল৷ যার পুরোদমে ফায়দা লুটছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি৷ এবার দলের আরেক বিধায়েকর গলায় উল্টো সুর৷ বিতর্কের সূত্রপাত তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে৷ যা নিয়ে ফের নয়া জল্পনা বঙ্গের রাজনীতিতে৷ 

ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের বিধায়ক দীপক হালদার৷ তাকে নিয়েই শুরু হয়েছে গুঞ্জন৷ কারণটা অবশ্য তিনি নিজেই৷ নিজেই উস্কে দিলেন জল্পনা৷ নিজের বিধানসভায় দীর্ঘ ৪ বছরের বেশী তার নিষ্ক্রিয় থাকা নিয়ে শনিবার মুখ খোলেন তিনি। তার মতে ডায়মন্ডহারবারে নতুন বিধায়ক হয়েছে৷ আর সেই নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষোভ উগড় দেন বিধায়ক দীপক হালদার৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন,ডায়মন্ড হারবারে নতুন বিধায়ক হয়েছে তা সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম দেখে বোঝা যাচ্ছে। অবশ্য কারোর নাম না করেই এই মন্তব্য করেন তিনি৷ তাকে এই পোস্ট নিয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলেও তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজী হননি বিধায়ক৷ শুধু তিনি বলেন, সাড়ে চার বছর ধরে ডায়মন্ডহারবারের মানুষ দেখছে সত্যটা কী৷

এদিন শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রীত্ব ত্যাগ নিয়ে বিধায়ক জানান, এটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা৷ প্রসঙ্গত, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে বিধায়ক দীপক হালদার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি পদে ছিলেন।তখন রাজ্যের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।বিধায়ক দীপক হালদার ২০১১ সালে এবং ২০১৬ সালে তৃণমূলের প্রার্থীতে জয়ী হয় ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে৷ দলে থেকে বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন বিধায়ক৷ তাহলে কী তিনি দলবদলের কথা ভাবছেন? জল্পনা তুঙ্গে৷ 

এদিকে শুভেন্দুর মন্ত্রীত্ব ত্যাগের পর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পূর্ব ও পশ্চিম সহ বিভিন্ন বিধানসভা গুলিতে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা পোষ্টার ও ফেক্স টাঙিয়ে ফেলেছে৷ তাতে শাসক দলের চিন্তার ভাঁজ অনেকটা চওড়া হতে শুরু করেছে। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বাঁশড়া অঞ্চলের ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশন চত্বরে শুভেন্দু অধিকারীর পোষ্টার পড়লো দাদার অনুগামী বলে৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১ টি বিধানসভা আসন। যা রাজ্যের সরকার গঠনের বিশেষ ভূমিকা হয়ে ওঠে সংখ্যা গরিষ্ঠতার ক্ষেত্রে। রাজ্যের সব থেকে বেশি আসন সংখ্যা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। সেখানে ৩৩ টি আসন সংখ্যা আর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩১ টি আসন সংখ্যা।ফলে এই দুটি জেলা রাজ্যের সরকার গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

এদিকে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক সওকাত মোল্লার খাস তালুকে শুভেন্দু অধিকারী অনুগামীরা দাদার দিকে তাকিয়ে আছে আগামী দিনে তিনি কি করেন। এপ্রসঙ্গে ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূলের বিধায়ক শ্যামল মন্ডল বলেন, শুভেন্দুদা এখনও তৃণমূলের বিধায়ক৷ যারা পোস্টার ফেলেছেন তারা ভালোবাসার নিরিখে হোক বা অতিরিক্ত শ্রদ্ধা বসতই পোস্টার ফেলেছেন৷ যদিও বিজেপির দাবি, যারা তৃণমূলের অত্যাচারে তিতিবিরক্ত হয়ে অনেকেই দল ছাড়তে চাইছে৷

তবে শুভেন্দু অধিকারী সম্পূর্ণ ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দল ছেড়ে দিলে ২০২১ এ বড়সড় পরিবর্তন ঘটতে পারে ভোট বাক্সে এমনি মত রাজনৈতিক মহলে।এদিকে শুভেন্দু অধিকারী পোষ্টার লাগানোর খবর ছড়িয়ে পড়তে রেল পুলিশ নড়েচড়ে বসে।কিছুক্ষণের মধ্যেই রেল পুলিশ এসে ঘুটিয়ারি শরিফের শুভেন্দু অধিকারী লাগানোর পোষ্টার ফেক্স খুলে নেয়। রেল পুলিশ জানান এমন ধরনের পোষ্টার ফেক্স কারা লাগিয়েছে জানা নেই। তবে দেখামাত্র খুলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 2 =