কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক পদত্যাগ তথা দলত্যাগের ঘটনায় রীতিমতো জেরবার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলত্যাগের ধারাকে বজায় রেখে আজই বিধায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হাওড়ার নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এহেন নড়বড়ে পরিস্থিতিতে আয়োজিত হয়েছিল তৃণমূলের কার্যসমিতির বৈঠক।
এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ তথা বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়। তিনি জানান, বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় বিধায়ক, এমএলএ এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ভোটের আগে কীভাবে দল কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে এদিনের বৈঠকে সে ব্যাপারেই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সৌগত রায়। সাংবাদিক বৈঠকে সৌগত রায় জানিয়েছেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গ দিয়েই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করবে তৃণমূল৷ আসন্ন সংসদের বাজেট অধিবেশনে তৃণমূল যোগ দিলেও, উপস্থিত থাকবেন কম সংখ্যক সংসদ সদস্য৷ কারণ বাকিরা রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারেই ব্যস্ত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
বৈঠক শেষে সম্প্রতি কৃষক আন্দোলন নিয়ে দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে এক হাত নিয়েছেন সৌগত বাবু। সংসদীয় বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে আজ রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার সূত্র ধরে বহু রাজনৈতিক দলই সেই ভাষণ বয়কট করেছে। এদিন সে প্রসঙ্গ টেনে সৌগত রায় জানিয়েছেন, “রাষ্ট্রপতির এটা মনে রাখা উচিত ছিল কৃষকদের ইস্যু সবচেয়ে জরুরি। ভারতের কৃষকরা সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। কিন্তু সরকার এখনও যে অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি।” বিজেপি কৃষক আন্দোলনের গতিরোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে যে অশান্তির সাক্ষী থেকেছে রাজধানী বিজেপি ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই তাতে ইন্ধন জুগিয়েছেন, বলেন সৌগত রায়। তাঁর কথায়, “আমাদের দল প্রথম দিন থেকেই কৃষকদের পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।” এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়ে গেছে বলেও স্মরণ করিয়েছেন সৌগত রায়। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশ করা হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি বাজেট নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে তা পাশ হবে। এই দুদিনই শাসকদলের সমস্ত বিধায়কদের বিধানসভায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।