কলকাতা: তৃণমূল পরিচালিত কালিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দাদাগিরির জেরে আশ্রয়হীন চক্রবর্তী পরিবার৷ সুরক্ষা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ৷ পরিবারকে তুলে দিয়ে পোঁতা হল পঞ্চায়েতের প্রকল্পের ফলক৷ ভোটের বিধি উড়িয়ে রাতারতি বসসল প্রকল্পের ফলক৷
বিধানসভা নির্বাচনের আচরণবিধির লাঘু হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে কোনও প্রকল্প ঘোষণা করা যায় না৷ ফলে যে সমস্ত সরকারি প্রকল্প কাজ চালু হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি ছাড়া নতুন করে কোনও প্রকল্প করা যাবে না৷ কিন্তু কলকাতার অদূরে কালিকাপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দাদাগিরি কেন পুলিশের নজরে এল না উঠছে প্রশ্ন৷
পরিবারের অভিযোগ, চক্রবর্তী পরিবারের জমি দখল করতে গিয়ে মৃত গৃহকর্তাকে সাক্ষী হিসাবে ডেকে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন পঞ্চায়েত প্রধান মাধব চন্দ্র মণ্ডল৷ আশ্রয়হীন পরিবারের দাবি, ১৯৮২ সালে কালিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত জমি কেনেন ভাস্কর চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তি৷ তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী আভা চক্রোবর্তী সমস্ত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি একমাত্র নাতি প্রতিপ চক্রবর্তীর নামে উইল করে যান৷
প্রতীপ চক্রবর্তীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী মামলার বয়ানে জানিয়েছেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ কালিকাপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মাধব চন্দ্র মণ্ডল সদলবলে এসে প্রতীপ চক্রবর্তীদের ফাঁকা বাড়ি জবর দখল করে নেন৷ সেখান স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবির বলে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন স্থানীয় পঞ্চায়েত৷ প্রতিপবাবু প্রতিবাদ জানালে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়৷ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় অভিযোগও করেন তিনি৷
আইনজীবি আশীষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, ১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইন ৪১ এবং ৪৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোন জায়গাতে সরকারি প্রকল্প করতে হলে বিশেষ করে পঞ্চায়েত এলাকায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারের অনুমোদন নিতে হবে এবং তা সম্পূর্ণ জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী করতে হবে৷ জমি অধিগ্রহণ করার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি নিতে হবে৷ সরকারি প্রকল্পের জন্য জমির নেওয়ার ক্ষেত্রে জমির মালিককে উপযুক্ত জমির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷ কিন্তু ২৫টি আম গাছ এবং সুপারি গাছ কেটে সেখানে বেআইনিভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে৷ ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী৷ এইভাবে বেআইনি নির্মাণ গড়ে তুলে ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পুলিশ সুপার এবং ভূমি রাজস্ব দফতরের অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের৷ তৃণমূলের পরিচালিত কালিকাপুর পঞ্চায়েত প্রধানের চোখ রাঙ্গানি ও হুমকি এখন নিত্য সঙ্গী৷ সুবিচারের আশায় বাড়ি ছাড়া পরিবার৷ গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷