ভোটের দিন সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছেন তৃণমূলের কর্মী! অথচ সেভাবে পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা গেল না শাসক দলকে!

ভোটের দিন সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছেন তৃণমূলের কর্মী! অথচ সেভাবে পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা গেল না শাসক দলকে!

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার শুরুর বহু আগে থেকেই বিরোধীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে থাকে এবারে ভোটের দিন প্রতিরোধ হবে। একতরফা তৃণমূলকে ময়দান ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এই দাবি বিজেপির পাশাপাশি বহুবার করেছিলেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। সেই সূত্রে শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন জেলায় জেলায় সত্যিই তৃণমূলকে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। তাতে শাসক-বিরোধী দু’পক্ষেরই ঝরে গিয়েছে বহু তাজা প্রাণ। তাতে দেখা যাচ্ছে ভোট হিংসায় তৃণমূলের কর্মীদের বেশি মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হল সেই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সেভাবে সরব হতে দেখা যায়নি। তবে কী নীচুতলার কেউ প্রাণ হারালে তা সেভাবে ছুঁয়ে যাচ্ছে না শীর্ষ নেতৃত্বকে? কেন নিহত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গেলেন না রাজ্য নেতৃত্ব? কেন সেভাবে খোঁজখবর না নেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁদের বিরুদ্ধে? এই প্রশ্ন করছেন তৃণমূলের নীচুতলার কর্মী সমর্থকরা।

 

বিরোধীরা যেভাবে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিল সেটা বহু জায়গাতেই বাস্তবে দেখা গিয়েছে। এমনটা যে হবে সেটা তৃণমূল বুঝতে পারেনি। কিন্তু তার ফল ভোটবাক্সে কতটা পড়বে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এটা ঠিক যেভাবে জেলায় জেলায় তৃণমূলকে প্রতিরোধের মধ্যে পড়তে হয়েছে তা লোকসভা নির্বাচনের আগে শাসকের কাছে রীতিমতো অশনি সংকেতের মতোই। সবচেয়ে বড় কথা তৃণমূল সবসময় দাবি করে তাদের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে যে উন্নতি হয়েছে তা অতীতে কোনও দিন হয়নি। যদি সেটাই হবে তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ কেন ঘটল জেলায় জেলায়? তবে কি তৃণমূল যে দাবি করে আসছে তা ঠিক নয়? সত্যিই কি গ্রামাঞ্চলে উন্নতি হয়নি বলেই সাধারণ মানুষের এত ক্ষোভ? যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনে হওয়া হিংসা ঘিরে তৃণমূলের দাবি বিরোধীদের প্ররোচনাতেই এটা হয়েছে। নির্বাচনে হার সুনিশ্চিত জেনে বিরোধীরা সন্ত্রাসের পথে হেঁটেছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তৃণমূল যে দাবি করছে সত্যিই কি তার এতটা সরলীকরণ করা যায়? কারণ গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে ঘটনাগুলি নিয়ে তিতিবিরক্ত গ্রাম বাংলার মানুষ। তৃণমূলের নেতাদের একাংশের ব্যবহার নিয়েও বহুদিন ধরে ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষের। এছাড়া পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে মানুষের। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন জেলায় জেলায় তৃণমূলকে ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে, যেটা এতটা আশা করা যায়নি। আর তাতেই ঝরে গিয়েছে বহু তাজা প্রাণ যার মধ্যে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা বেশি। এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে চিন্তা করতে হবে বলে মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। না হলে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে তৃণমূলকে নিশ্চিতভাবে আরও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের ফলাফল কি হয় সেদিকেই চোখ থাকবে সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *