কলকাতা: বাংলার মসনদ রক্ষায় নিশ্চিভাবেই তৃণমূলের হাতে অন্যতম অস্ত্র ছিল ‘বহিরাগত’ ইস্যু৷ তাঁর মূল কথা ছিল, বাংলা শাসন করবে বাঙালি৷ কোনও বহিরাগত নয়৷ বাঙালিয়ানার এই ভাবাবেগে ভর করেই ২০০ পাড় তৃণমূল কংগ্রেস৷
আরও পড়ুন- একুশের নির্বাচনে বিপর্যস্ত সিপিআইএম, হার নিয়ে বিবৃতি দিলেন বিমান বসু
শুধু তাই নয়, বিজেপি’র হয়ে রাজ্যে প্রচারে নেমেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা৷ শুধু তাই নয় রাজ্যে বিজেপি’র হয়ে বারবার প্রচারে এসেছেন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা৷ যার মধ্যে অন্যতম যোগী আদিত্যনাথ৷ এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা৷ সেই নিরিখে দুই-একজন ছাড়া উল্লেখজনক ভাবে দেখা যায়নি বঙ্গ বিজেপি’র নেতাদের৷ বরং বঙ্গ বিজেপি নেতারা সমস্ত কাজ করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অঙ্গুলিহেলনে৷ যা মমতার ‘বহিরাগত’ অস্ত্রে আরও বেশি করে শান দিয়েছে৷
পাশাপাশি আরও একটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বারবার এটা বলে গিয়েছেন, বাংলার সংস্কৃতি অনুধাবন করতে পারবেন না বহিরাগত নেতারা৷ বাঙালির হৃদস্পন্দন বুঝবে কেবলমাত্র বাঙালিরাই৷ পাশাপাশি বিভিন্ন মনীষীদের নিয়ে বিজেপি নেতাদের নানা সময়ে দেওয়া ভুল তথ্যের কথা তুলে তিনি এটা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে কতটা বেমানান বিজেপি নেতৃ্ত্ব৷ যা নিশ্চিত ভাবেই দাগ কেটেছে বাঙালির মনে৷
বিজেপি বঙ্গ জয়ে হিন্দুত্ববাদের জিগির উস্কে মেরুকরণের চেষ্টা করলেও, তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি, তা ইভিএম-এই স্পষ্ট৷ বরং অনেক বেশি মূল্য পেয়েছে বাঙালি আবেগ৷ বিজেপি’র দাবি ছিল ভোটে জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন ভূমিপুত্রই৷ কিন্তু ভোটে কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি গেরুয়া শিবির৷ বরং তাঁরা বারবার নরেন্দ্র মোদীর হাতেই বাংলাকে তুলে দেওয়ার কথা বলে গিয়েছেন৷ সব মিলিয়ে ফের বঙ্গজুড়ে উঠল সবুজ ঝড়৷ আরও একবার নীল বাড়ির দখল নিল তৃণমূল৷