কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস দাবি তুলেছিলেন যে সঠিক পদ্ধতিতে সব আসনে গণনা হলে বিজেপি আরো কম আসন পেত। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রাম এবং বলরামপুর বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। কারণ নন্দীগ্রাম নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক ছিল কারণ সেখানে প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। সেই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এদিকে বলরামপুর কেন্দ্র নিয়েও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সেখানকার পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো। দুটি ক্ষেত্রেই একেবারে অল্প ব্যবধানে জিতেছে বিজেপি। আরো কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে মামলার পথে হাঁটতে পারে তারা।
হিসেব বলছে, ময়না থেকে শুরু করে গোঘাট, বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে শুরু করে কুমারগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র, সবেতেই বিজেপির কাছে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হয়েছে একেবারে অল্প কিছু ব্যবধানে। সেই প্রেক্ষিতেই এবার এই কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে মামলা করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস এবং যদি মামলা করা হয় তাহলে যে বিজেপি আরো চাপে পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে দুইজন বিজেপি বিধায়ক, জগন্নাথ সরকার এবং নিশীথ প্রামাণিক পদ ছেড়েছেন কারণ তাঁরা সাংসদ থাকতে চান। তারপর মুকুল রায় ফের একবার তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়ায় তিনি আর বিজেপি বিধায়ক থাকবেন না। অতএব ৭৭ আসন পাওয়া বিজেপির এখন বিধায়ক সংখ্যা ৭৪। তাই এবার যদি উপরিউক্ত বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মামলা করে তাহলে যে বিজেপির চাপ বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন- তথ্য দেয়নি রাজ্য, ডেঙ্গি মোকাবিলায় বাংলার বরাদ্দ ছাঁটল কেন্দ্র
ইতিমধ্যেই বলরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বলরামপুরে ভোট এবং গণনা সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণের করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো যে মামলা করেছিলেন তার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ঘটনা হল, বলরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির বানেশ্বর মাহাতোর কাছে মাত্র ৪২৩ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো। তার পরেই তিনি এই কেন্দ্রের ফলাফলের ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এবং পুনরায় নির্বাচনের আবেদন জানান। আসলে গণনায় কারচুপি এবং ভোট বাতিলের দাবিতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মামলা করেন। এই মামলার ইস্যুতেই আজ নির্বাচন কমিশনকে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ওই কেন্দ্রের নির্বাচন এবং গণনা সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। কোন কিছু যেন মুছে ফেলা না হয়।