কলকাতা: বিগত কয়েকদিন ধরে বেসুরো থাকার পর অবশেষে জেলার তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য পদ এবং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। সঙ্গে এও অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁকে হারানোর জন্য ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে খোদ দলই! এবার এই দল বিরোধী মন্তব্যের জন্য তাঁকে শোকজ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রবীর ঘোষাল আক্ষেপের সুরে বললেন, পদত্যাগ করার কথা আগেই তিনি ভেবেছিলেন কিন্তু এলাকার মানুষের কথা ভেবে দেননি। তবে এখন দলে থাকা যুক্তিযুক্ত মনে করছেন না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রবীর ঘোষাল। তাঁর কথায়, দলের মধ্যেই যদি কেউ ব্রাত্য হয়ে যায় তাহলে দলের সঙ্গে থাকা কখনোই যুক্তিযুক্ত নয়। তাই বিগত কয়েকদিন ধরে বেসুরো থাকার পর অবশেষে জেলার তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য পদ এবং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। প্রবীরের দাবি, তিনি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন এবং তাঁর থেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পর্যন্ত পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে কোনো রকম সমস্যার সমাধান হয়নি। এক্ষেত্রে তাঁর নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়! প্রবীরের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তার সামনেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সম্পূর্ণ বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিলেও তিনি আদতে কিছু করেননি।
বৈশালী ডালমিয়াকে বহিস্কার করার সময়ই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছিল, দল বিরোধী কোনো মন্তব্য বা কাজ কখনোই সহ্য করবে না দল। ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তের কোপ পড়েছে রানাঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের উপর। দল বিরোধী কাজ করছেন এই অভিযোগে তাঁকেও গতকাল অপসারণ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। এদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্য মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ক ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। একইসঙ্গে বৈশালী ডালমিয়া ষকে বহিষ্কার করা হয়েছে আবার লক্ষ্মীরতন শুক্লা নিজের পদ ত্যাগ করেছেন। এবার প্রবীর ঘোষাল ইস্তফা দিলেন নিজের পদ থেকে। সব মিলিয়ে কার্যত দিশেহারা অবস্থায় রয়েছে রাজ্যের শাসক দল।