কলকাতা: হাতে মাত্র কয়েকটা মাস। তারপরই বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে পায়ের তলার জমি আরও শক্ত করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। আর শাসকদলকে টক্কর দিতে গুঁটি সাজাতে শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যের বহু সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে তারা। আর বিজেপিকে তীব্র লড়াইয়ে ফেলতে ও দলের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ১০ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান পেশ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
সেখানে বলা হয়েছে তাদের শাসনকালে ১১টি ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটেছে। তৃণমূল ভবনে বৃহস্পতিবার এই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। তাদের মতে গত কয়েক বছরে ১০টি ক্ষেত্রে রাজ্য উন্নয়নের পথে এগিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যবাসীর গড় আয়। রিপোর্ট কার্ডে বলা হয়েছে গত এক দশকে এই রাজ্যের মানুষের আয় দ্বিগুণ বেড়েছে। পাশাপাশি জিডিপিও বেড়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এছাড়া শিল্পক্ষেত্রেও আয় বৃদ্ধি পেয়েছে রাজ্যে।
খতিয়ান অনুয়াযী এই কয়েক বছরে শিক্ষাক্ষেত্রেও উন্নয়ন ঘটেছে রাজ্যে। শিক্ষা সহ খেলাধূলা, শিল্প ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্যই রাজ্যের বাজেট বেড়েছে। রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, মিড-ডে মিলের মতো অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে পড়ুয়ারা। গত ১০ বছরে রাজ্যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৫০টি কলেজ ও অনেক নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আমজনতার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে হাসপাতালের সংখ্যা বেড়েছে। বেড সংখ্যাও বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যখাতেও ৩ গুণ বাজেট বাড়িয়েছে।
রিপোর্ট কার্ডে এও বলা হয়েছে খাদ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্যের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। বাংলা আবাস যোজনার আওতায় উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৩৪ লক্ষ মানুষ। নির্মল বাংলা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে তৈরি হয়েছে শৌচাগার। রাস্তাঘাট উন্নত হয়েছে। বাড়ি-বাড়ি বিদ্যুৎ ও পানীয় জল পৌঁছনোর কথাও বলা হয়েছে রিপোর্ট কার্ডে। এছাড়া কৃষকদের জন্য কৃষকবন্ধু প্রকল্পের নামও বলা হয়েছে। সমাজের প্রতিক্ষেত্রে মহিলাদের অধিকারের জন্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন রূপশ্রী প্রকল্পে মেয়েদের বিয়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্যও একাধিক নতুন প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে রিপোর্ট কার্ডে। প্রবীণদের জন্য পেনশন ও কর্মসংস্থানের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলেও কার্ডে জানানো হয়েছে। এই কার্ড অনুসারে ১০০ দিনের কাজে ১ কোটি ৬৩ লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছেন। ২০১০ সালের তুলনায় রাজ্যে ১৫ শতাংশ কলকারখানা বেড়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ও বেড়েছে রাজ্যে। এর ফলে প্রায় দেড় কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছেন।