বোলপুর: কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে ওষ্ঠাগত বাংলার কয়েক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন৷ ভিন রাজ্যে কাজ হারিয়ে বাংলায় ফিরলেও কম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না পরিযায়ী শ্রমিকদের৷ কখনও তাঁদের বাংলায় ফেরা নিয়ে জটিলতা, আবার কখনও কোয়ারেন্টিন সেন্টারে চূড়ান্ত অফ ব্যবস্থার অভিযোগ৷ গটা বাংলা জুড়ে যখন শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি ও চরম উদাসীনতা ছবি ধরা পড়ছে, ঠিক তখনই শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দীরায়৷ ‘সবাইকে জামাই আদর’ দেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সংসদ৷ পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির৷
জেলায় কোয়ারেন্টিন সেন্টার নিয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য আজ বিডিওদের সঙ্গে দেখা করেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়৷ সাঁইথিয়ায় ব্লকের বিডিওর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি৷ বৈঠকে জলখাবারে হিসেবে ছিল কচি ডাব৷ ডাবের জলে গলা ভেজাতে ভেজাতে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূল সাংসদ৷ বিভিন্ন কোয়ারেন্টিন সেন্টারে চরম অব্যবস্থা নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাফ জানিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সবাইকে একসঙ্গে জামাই আদর দেওয়া সম্ভব নয়৷
শতাব্দি রায়ের মন্তব্য, ‘‘হাজার হাজার লোকের সমস্যা৷ সবাই যদি জামাই আদর চান, সেটা সম্ভব হবে না৷ মাছ দিলে বলছে মাংস কেন দেয়নি৷ মাংস দিলে বলা হচ্ছে, ডিম দেওয়া হয়নি৷ সবাই এখন অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে৷ সবাই দীর্ঘদিন পরে এখানে ফিরছে৷ বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়ছে৷ আর এটা স্বাভাবিক, যদি আপনার বাড়িতে একজন আসে, যেরকম ভাবে আপনি তাঁকে অভর্থনা করতে পারবেন, এক হাজার লোক আসলে তেমন আপনি করতে পারবেন না৷ সেইজন্য এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ গুলি তৈরি করা হয়েছে বা হচ্ছে৷ এখন তো বাঁচার লড়াই৷ তাই এগুলি একটু মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে৷’’
তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ৷ এটাই ওঁদের দৃষ্টিভঙ্গি মন্তব্য করেছে রাজ্য বিজেপির৷ এবিষয়ে দিলীপ ঘোষে মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের প্রথমে শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে চাইনি৷ মানুষ হাহাকার করছে৷ খেতে পারছে না৷ কষ্টে আছে৷ পরিবারের লোকেরা হাহাকার করছেন৷ কেন্দ্র সরকার মানবিকতার খাতিরে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে৷ এঁরা ওঁদের নিতে চাইছে না৷ থাকার ব্যবস্থা নেই৷ পরীক্ষা হচ্ছে না৷ আজ তৃণমূল সাংসদের মুখের কথায় প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে, সামান্য সহমর্মিতা তাঁদের নেই৷ যে মানুষগুলিকে আপনারা খেতে দেননি বলে, পেটের জন্য ভিন রাজ্যে কাজ করছেন, তাঁদের বাড়ি আসার ব্যবস্থা ঠিকঠাক করতে পারছেন না৷ আপনারা তাদের থাকার ব্যবস্থা কেন করতে পারছেন না? আপনাদের তো টাকার অভাব নেই৷ টাকা তো অপচয় হচ্ছে৷ লুট হচ্ছে৷ সামান্য কয়েক হাজার টাকা খরচ করলে তারা থাকতে পারেন, একটু ভালোভাবে৷ এদের দৃষ্টিভঙ্গি এরকম৷ এক পয়সা খরচ করবে না৷’’