হুগলি: দলের অন্দরেও তিনি ঠোঁটকাটা বলে পরিচিত৷ শ্রীরামপুরের এহেন দাপুটে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলের সন্ধ্যায় নিজের লোকসভা এলাকার একটি কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু রাগ করিস না ভাই! অনেক কথা বলে ফেলেছি! কখন কোনওদিন তুইও চলে আসবি, তার তো কোনও ঠিক নেই। যাদের যাদের সম্বন্ধে সমালোচনা করেছিলাম, তাদের সবাইকে বলছি কেউ রাগ করিস না। তখন তোরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলি। তাই বলেছিলাম। আবার কবে কোনদিন চলে এসে আমার চেয়ে তৃণমূলের বেশি কাছের হয়ে যাবি!”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা৷ কর্মীদের ঘরোয়া আলোচনায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন৷ তাঁরা বলছেন, আদতে শুভেন্দুর কাছে ক্ষমা চেয়ে কৌশলে কাকে বার্তা দিতে চাইলেন কল্যাণ? ‘বিশ্বাসঘাতকদের আর দলে নেওয়া হবে না৷ যারা ফিরেছেন, তাদেরও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে৷’ খড়দহের প্রচারে গিয়ে ক’দিন আগে দলীয় কর্মীদের এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অভিষেকের ওই মন্তব্যের এক সপ্তাহের ব্যবধানে গত শনিবার ত্রিপুরায় দলীয় সভায় তাঁর হাত থেকেই পতাকা নিয়ে দলে ফিরেছেন দলবদলু রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷
স্বভাবতই কল্যাণের এহেন মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ কারণ, শুভেন্দুর কাছে কৌশলী ‘ক্ষমা’ চাওয়ার পাশাপাশি মঙ্গলবারের সন্ধ্যায় কালীপুজোর অনুষ্ঠানে রাজীবকে টিপ্পনি কেটে গানও গাইতে দেখা যায় সাংসদকে৷ সাংসদ গাইতে থাকেন, “আমি সব পারেতেই আছি গাঙের জলে ভাসিয়ে দিয়ে ডিঙা… আমি দুই নদীতেই নাচি…মানে তৃণমূলে নাচছে, বিজেপিতেও নাচছে।… একবার চলে যাব মা বলে, একবার চলে যাব মোদীর কাছে… দুই চোখে দুই জলের ধারা মেঘনা-যমুনা। মমতাদি এক কোণে মোদীজি আরেক কোণে।” স্বভাবতই, জল্পনার অন্ত নেই৷ ‘আমার চেয়ে তৃণমূলের বেশি কাছের হয়ে যাবি’ এই লাইনটি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাঁদের মতে, এ আদতে দলবদলু প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে দলের নেতাদেরই বার্তা দেওয়ার প্রচেষ্টার নামান্তর৷