কলকাতা: কলকাতা পুরভোটে অবাধ রিগিং, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা৷ দিন ভর দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে৷ কোথাও আবার চলেছে মারপিট, বোমাবাজি৷ অথচ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিচারে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া কলকাতা পুরভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ৷ এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, ‘‘উৎসবের মেজাজে মানুষ ভোট দিচ্ছেন৷ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ এই উৎসবে সামিল হয়েছেন৷ শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হচ্ছে। লড়াই করতে না পেরে নাটক করছে বিরোধীরা৷’’ সোমবার তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’তেও সেই সুর৷ সেখানে লেখা হল, কলকাতা পুরসভা নির্বাচন ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’৷
আরও পড়ুন- বেলাগাম ‘সন্ত্রাস’ পুরভোটে! হাইকোর্টে গেল বিজেপি-সিপিএম
অথচ পুরসভা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বিরোধীদের। কখনও সিসিটিভি’র মুখ ঢাকা হয়েছে বন্ধ, কখনও বোমাবাজি হয়েছে, বুথ দখল করে এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে৷ হয়েছে ছাপ্পা ভোট বা রিগিং৷ রবিবাসরীয় সকাল থেকেই মহানগর জুড়ে ছিল টানটান উত্তেজনা৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বিরোধীরা। থানার সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন৷ আর সেই বিক্ষোভের স্রোতেই কোথাও যেন মিলে যায় বাম-বিজেপি কংগ্রেসের সুর৷ এক সারিতে বসে শাসক দলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তাঁরা৷ তবে পুলিশের ভূমিকায় বেশ সন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। আর অভিষেকের হুঙ্কার, অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া হবে৷
পুরভোটের দিন দেখা গিয়েছিল থানার সামনে একযোগে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বাম-বিজেপি ও কংগ্রেস৷ আজ জাগো বাংলায় সেই বিরোধী ঐক্যকেই রামধনু জোটের তত্ত্ব হিসাবে খাড়া করা হয়েছে৷ জাগো বাংলায় লেখা হয়েছে, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তায় বসে পড়েন বাম-কংগ্রেস-বিজেপি কর্মীরা৷ বিরল বিরোধী ঐক্য নিয়ে জাগো বাংলায় বলা হয়েছে, ‘‘রামধনু জোটকেই রবিবার ক্যামেরায় সামনে প্রমাণ করল সিপিআইএম–বিজেপি–কংগ্রেস। রবিবার দুপুরে যখন বোঝাই যাচ্ছিল বিরোধীরা ১০–০ গোল খেয়ে গিয়েছে, তখন ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম–কংগ্রেস–বিজেপি কর্মীরা ভোটের ময়দান ছেড়ে চলে আসেন বড়তলা থানা ঘেরাও করতে… অভূতপূর্ব দৃশ্য।’’
প্রসঙ্গত, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বুথে তৃণমূল প্রার্থী মোহনকুমার গুপ্ত রিগিং করছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। অভিযোগ, ভোট লুঠ চললেও পুলিশ নীরব দর্শক। এই অভিযোগে বেলা ১২টা নাগাদ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বড়তলা থানার সামনে চলে আসেন বাম, সিপিএম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা। থানার বাইরে একযোগে শুরু হয় বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের স্লোগান সাউটিং৷ সেই বিরোধী ঐক্যেই তৃণমূলের মুখপত্রে উঠে এল রামধনু তত্ত্ব৷