tmc
কলকাতা: সহকারী প্রধান শিক্ষককে স্কুলে ঢুকতেই বাধা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন! এমনই অভিযোগ ওঠে শাসক দলের তিন নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই ইস্যু গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। এখন সেই মামলার শুনানিতে কড়া অবস্থান নিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে ১৫ মাস পরে মিলল নতুন স্কুলের ঠিকানা। একই সঙ্গে স্কুলের সহ শিক্ষক ও জেলার ডিআই’কে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ঘটনা হল দক্ষিণ দিনাজপুরের এক প্রাথমিক স্কুলের। ২০১৭ সালে স্থানীয় তিন তৃণমূল নেতা সেখানে শিক্ষকের চাকরি পান। তারপর থেকেই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার নট্যকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক নির্যাতনের পাশাপশি তার কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। জানা গিয়েছে, দিলীপ কুমার একজন সিনিয়র শিক্ষক থেকে টিচার ইন চার্জের দায়িত্ব পান। স্কুলের পঠনপাঠনের মান উন্নয়নে থেকে স্কুলের পরিকাঠামো সবই তারই তত্ত্বাবধানে হয়। তবে ২০১৯ সালে তার একমাত্র সন্তানের চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্গালোর গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় অবৈধভাবেই তাকে টিচার ইন চার্জের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে স্কুলে যোগদান করলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
গোটা বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর পর মামলার শুনানিতে মামলকারির পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তাঁর দাবি, দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিআই ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে জানানো সত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি স্কুলের আর্থিক তছরুপ এবং নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপ চললেও স্কুল সে বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে জানালেও ওই তিন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ওই তিন শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষককে স্কুলে ডুকতে বাধা দেন।
এই মামলায় বিচারপতি শুনানি শেষে রাজ্যের আইনজীবীর কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। তাই স্কুলের সহ শিক্ষক ও দক্ষিণ দিনাজপুর ডিআইকে আগামী ৫ অক্টোবর সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেন। মামলাকারীর যুক্তি, কোনও সহকারী প্রধান শিক্ষককে তার অনুপস্থিতিতে পদ থেকে সরানো যায় না এবং রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর তার অভিযোগ খতিয়ে না দেখেই বেতন বন্ধ করতে পারে না।