বনগাঁ: দল ছাড়ালেন এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। পাশাপাশি সরকারী পদ থেকেও সরলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বনগাঁর তৃণমুল নেতা রতন ঘোষ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ থেকে ইস্তফা দিলেন। খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের পদ ছাড়লেন তিনি।
বনগাঁ তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানে রতন ঘোষের প্রভাবও অনেকটাই। আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তাঁকে সুন্দরবনের সন্দেশখালি জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি হয় ছন্দপতন। গত কয়েক মাস যাবৎ এলাকার দলীয় কোনও সভায় যাচ্ছিলেন না তিনি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রতন ঘোষ হঠাৎ কেন সরে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। বৃহস্পতিবার দলত্যাগ করলেন তিনি। পাশাপাশি জেলা পরিষদের পদও ত্যাগ করলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবারই বনগাঁর গোপালনগরে সভা করেন মমতা। মতুয়াদের দাবিকে খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দেন। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন না রতন ঘোষ। উলটে তিনি জেলা শাসকের দফতরে এদিন যান। সেখানেই জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন তিনি। তাঁর ইস্তফা পত্রের একটি কপি তিনি জেলা সভাপতিকে পাঠান। এরপরই শোনা যায় শুধু জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের পদ নয়, তৃণমূলের সাধারণ সদস্যপদও ছাড়তে পারেন রতন ঘোষ। অন্তত জল্পনা তেমনই।
প্রসঙ্গত, বনগাঁয় তৃণমূলের আধিপত্য বজায় রাখতে মতুয়া একটি শক্ত খুঁটি। তাই এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে তৃণমূল। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও মতুয়াদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্কে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাণ্ডারী ছিলেন রতন ঘোষ। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের সেই ক্ষেত্রে পা দিতে চাইছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনেই তার আঁচ মেলে। মতুয়া নেতাকে দলের টিকিট দিয়ে ময়দানে নামে বিজেপি। তারা যে পাশার চাল বুঝেই ফেলবে, তা সেদিন থেকেই সামনে আসে। এছাড়া মতুয়াদের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে তাঁদের ধর্ম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও অংশগ্রহণ করেন। এবার রতন ঘোষের পদত্যাগ বিজেপি শিবিরকে অনেকটা স্বস্তি এনে দেবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।