কুলতলি: পেটের টানে বারবার মাছ ধরতে ছুটে যেতে হয় গভীর জঙ্গলে। আর সেই ছুটে যাওয়াই কাল হল। রবিবারের পর ফের সোমবার রাতে বাঘের হামলায় প্রাণ গেল এক কাঁকড়া শিকারীর। মৃতের শ্রীনিবাস মণ্ডল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির কিশোরী মোহনপুরের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাহান্ন বছর বয়সি শ্রীনিবাস ছোট থেকে দেখেছে মাছ ও কাঁকড়া ধরেই তাদের জীবনযাপন হয়। মাছ-কাঁকড়া ধরতে যাওয়ায় ঝুঁকি রয়েছে যথেষ্ট৷ তাও হাড়ে হাড়ে জানত। তা সত্ত্বেও যে কোনও উপায় নেই। কারণ, পেট যে বড় বালাই। নিজের এবং পরিজনদের পেটে খাবার জোটাতে তাই ঝুঁকিই নিতে হত তাকে। বহুবার বাঘের মুখ থেকে কোনওক্রমে ফিরে এলেও এবার আর হল না। বাঘের হামলায় প্রাণ গেল তার।
সোমবার কুলতলির কিশোরী মোহনপুর থেকে সুন্দরবনের বেলিফিলির জঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দেয় সঙ্গীদের সাথে। লক্ষ্য ছিল ওই নদীর খাঁড়িতে কাঁকড়া সংগ্রহ করা । ওই কাঁকড়া ধরে এনে বাজারে বিক্রি করলে দু’পয়সা আয়৷ যা দিয়ে কয়েকটা দিন সংসার চলে যাবে আরামে। পেট ভরে খাবার পায় পরিজনেরা। তাদের মুখে হাসি ফোটে। তবে আর সঙ্গ দিল না৷ ঘটল ছন্দপতন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলিফিলির জঙ্গল লাগোয়া খাঁড়িতে নৌকা বেঁধে কাঁকড়া ধরার সময় অতর্কিতে পিছন দিক থেকে শ্রীনিবাসের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি বাঘ । এই আক্রমণে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সঙ্গীসাথীরা বাঘের কবল থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে তাকে। তবে লাভ হয়নি তেমন। শেষ হয়ে যায় সব কিছু। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় শ্রীনিবাস। এরপর দেহ নিয়ে এলাকায় ফেরে তার সঙ্গীরা । এই ঘটনায় এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে। মৃত ও তার সঙ্গীদের কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও বিভাগীয় বন আধিকারিকরা৷