টিকিটের খোঁজে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে ‘বঞ্চিত’ হলেন যারা!

টিকিটের খোঁজে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে ‘বঞ্চিত’ হলেন যারা!

 

কলকাতা: গত কয়েকদিনে তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীরা। আশা ছিল তৃণমূল সুযোগ না দিলেও বিজেপি নিশ্চয়ই দেবে। রামের নামে সোনার বাংলা গড়ার কারিগর হবেন তারাও। কিন্তু বৃহস্পতিবার অনেকেরই সেই আশা জলে গেল। টিকিটের খোঁজে তৃণমূল থেকে পাল্টি খেয়ে বিজেপিতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হল বেশ কয়েকজন হেভিওয়েটকে। তবে বিজেপিতে গিয়ে ঝুলিতে পদ্মমার্কা টিকিটও ঢুকেছে অনেকের।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চার দফার প্রার্থী তালিকায় ১৪৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে বিজেপি। কিন্তু সেই তালিকায় ব্রাত্য ডাকাবুকো জোড়াফুল নেত্রী সোনালী গুহ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে টিকিট না পেয়ে রীতিমতো কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলেন মমতার একসময়ের ছায়াসঙ্গী সোনালী। টিকিট না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে হাউ হাউ করে কেঁদে ভাসিয়েছিলেন তৃণমূলের এই প্রাক্তন নেত্রী। দুদিন পরেই টিকিটের আশায় বিজেপিতে গিয়ে ভিড়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিজেপিও তার আশা পূরণ করতে পারেনি। একই অবস্থা হয়েছে প্রাক্তন ফুটবলার তথা বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল নেতা দীপেন্দু বিশ্বাসেরও। বিজেপিতে গিয়েও প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই হলো না প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা’র। খালি হাতে ফিরতে হল তমলুকের প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক অশোক ডিন্ডাকেও। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই মঞ্চে অমিত শাহের হাত থেকে বিজেপি পতাকা তুলে নেওয়া সুকরা মুন্ডাও পদ্ম শিবিরের প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেলেন না।

যদিও তৃণমূল থেকে পাল্টি খাওয়া অনেক নেতাই বিজেপির টিকিট পেয়েছেন। সেই তালিকায় প্রধান তৃণমূলের তিন প্রাক্তন মেয়র। ২০১৯ সালের শেষের দিকে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সব্যসাচী দত্তকে তার নিজের এলাকা বিধাননগর থেকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া ব্রিগেড। আবার কয়েকদিন আগেই আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিজেপিতে যোগ দিয়েই পাণ্ডবেশ্বর থেকে টিকিট পেয়েছেন। হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকেও শিবপুর থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বীজপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে দলবিরোধী কাজ করার জন্য তাকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। অন্যদিকে, হাওড়া বালি থেকে বিজেপির টিকিট পেয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী বৈশালী ডালমিয়া।

আবার ব্যারাকপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকেও খড়দহ থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামিয়েছে পদ্ম শিবির। প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীকেও উত্তরবঙ্গের নাটাবাড়ি থেকে দেওয়া হয়েছে লড়াইয়ের ছাড়পত্র। কালনার দুবারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু নিজের কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের দুবারের বিধায়ক তৃণমূলত্যাগী সত্যেন্দ্রনাথ রায়ও প্রার্থী হয়েছেন সেই গঙ্গারামপুর থেকেই। নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে টিকিট পেয়েছেন রানাঘাট উত্তরের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ। তবে তৃণমূলত্যাগী এই সব নেতাদের বিজেপিতে যোগ দিয়েই দলের টিকিট পাওয়া একেবারেই ভাল চোখে দেখেনি পুরনো স্থানীয় নেতারা। সেই নিয়েই আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল পৌঁছেছে সপ্তমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − fifteen =