বাংলার এই গৃহবধূর সংগ্রহে রয়েছে দুর্লভ সব ফাউন্টেন পেন

বাংলার এই গৃহবধূর সংগ্রহে রয়েছে দুর্লভ সব ফাউন্টেন পেন

কলকাতা: বহু মানুষেরই শখ থাকে অনন্য বস্তুর সম্ভার নিজেদের সংগ্রহে রাখা৷ তবে দেখা গিয়েছে, সংগ্রহের দুনিয়ায় বিশেষত রয়েছে পুরুষ আধিপত্য৷ বিভিন্ন জনের  সংগ্রহের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে নানা জিনিসে৷ কারও কাছে রয়েছে দূর্মুল্য বই, কারও কাছে রয়েছে বিভিন্ন দেশের স্ট্যাম্প কিংবা বিভিন্ন ধরনের ঘড়ি৷ তবে পুরুষতান্ত্রিক এই দুনিয়ায় ব্যতিক্রম কলকাতার গৃহবধূ শুক্লা রায়৷ তাঁর সংগ্রহে আছে ৫০০টিরও বেশি ফাউন্টেন পেন৷ যা দেখে রীতিমতো তাক লেগে যায়৷ 

এছাড়াও একটি ফেসবুক পেজের মডারেটর ঝর্ণা৷ এই পেজে রয়েছে সেই সকল সদস্য, যাঁরা এখনও পুরনো স্রোতে গা ভাসিয়ে ভালোবাসেন কলম ধরতে৷ তাঁদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও রয়েছে৷ ঝর্ণা বলেন, ‘‘আমার বাবা-মা আমাকে বলতেন, অন্নপ্রাশনের সময় যখন একটি থালায় নানাবিধ সাজিয়ে আমার সামনে রাখা হয়েছিল, তখন আমি নাকি সবকিছু উপেক্ষা করে ফাউন্টেন পেনই হাতে তুলে নিয়েছিলাম৷ যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম, তখন ভাবতাম, কবে ফাউন্টেন পেন দিয়ে লিখতে পারব৷ আমার যখন ১২ কি ১৩ বছর বয়স, তখন থেকে ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা শুরু করি৷ টিফিনের জন্য যে পয়সা পেতাম, তা জমিয়েই পেন কিনতাম৷ কেউ যখন আমাকে কিছু উপহার দিতে চাইত, আমি তাঁর কাছ থেকে ফাউন্টেন পেনই চাইতাম৷’’ 

ঝর্ণা বলেন, ভিন্টেজ পেন সম্পূর্ণ অন্য এক যুগের৷ এখন আর এই পেন তৈরি হয় না৷ তবে তাঁর সংগ্রহের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই ভিন্টেজ পেন৷ তাঁর কথায়, মূলত দুটি কারণেই ভিন্টেজ পেন সংগ্রহ করেন তিনি৷ প্রথমত, তুলনামূলক কম দামে নামী ব্র্যান্ডের পেন পাওয়া যায়৷ দ্বিতীয়ত, এর মধ্যে একটা রোমাঞ্চ জড়িয়ে থাকে৷ হয়তো এর আগে কোনও বিখ্যাত ব্যক্তিত্বর হাতে শোভা পেয়েছে এই কলম৷ কে বলতে পারে! এই মডেলটি আর তৈরি হয় না৷ তাই আর পাওয়াও যায় না৷ 

ঝর্ণা বলেন, ‘‘আমার সংগ্রহে থাকা প্রতিটি কলমই মূল্যবান৷ এগুলি সব আমার কাছে অমূল্য সম্পদ৷ একজন কলমপ্রেমী এই সংগ্রহ থেকে তাঁর পছন্দের কমলটি নিশ্চিতভাবে খুঁজে পাবেন৷ এখানে লুপ্তপ্রায় এমন পেন রয়েছে, যা এখনও সচল৷ রয়েছে মন্ট ব্লাঙ্ক, পেলিকান, পার্কার, শেফার, এভারশার্প, ব্ল্যাকবার্ড এবং সোয়ানের মতো মডেলের পেন৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *