রায়গঞ্জ: নিরাপত্তার দাবিতে যখন ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন ভোটকর্মীদের একাংশ, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট কর্মীদের বুথে ঢুকতে বাধা স্থানীয়দের৷ বুথে ঢুকতে বাধা পেয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসা পুলিশের৷
জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় দফায় ভোট করাতে ছ’জনের একটি ভোটকর্মীদের দল রায়গঞ্জের আব্দুলঘাট গ্রামে যান৷ কিন্তু, ভোটকর্মীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে না দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ভোটকর্মীদের গাড়ির মধ্যেই বসিয়ে রাখা হয়৷ পুলিশ ও ভোটকর্মীদের ঘিরে চলে বিক্ষোভ৷ বিক্ষোভ সামাল দিতে মাঠে নামে পুলিশ৷ পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা৷ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে গ্রেপ্তারির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় পুলিশের তরফে৷ কিন্তু, তাতেও দমতে নারাজ স্থানীয়রা৷ রায়গঞ্জ লোকসভার আব্দুলঘাটা এপিএস বুথে স্থানীয়দের বিক্ষোভে জেরে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েন ভোটকর্মীরা৷ পোলিং অফিসার, সেক্টর অফিসে রিপোর্ট করা হয়৷ তারা এসে পোলিং অফিসারদের উপর চাপ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ৷ ভোট প্রক্রিয়ার জন্য তারা যেন বুথে প্রবেশ করে কাজ শুরু করেন, এই নির্দেও দেওয়া হয়৷ দোটানায় পড়ে পোলিং পার্টির প্রিজাইডিং অফিসার সজ্ঞা হারান৷ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে বলে খবর৷ এই অবস্থায় অন্যান্য পোলিং পাটিরা আতঙ্কে রয়েছেন। রাজ্য পুলিশের তরফে পলিং পার্টিকে বুথে প্রবেশ করে কাজ শুরু করার জন্য হুমকি ও চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ৷
গোটা ঘটনার কথা ঐক্য মঞ্চের কাছে পৌঁছনা মাত্র পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়৷ গোটা ঘটনা সংগঠনের তরফে চিফ এলেক্টরাল অফিসারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়৷ উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুলিশ ও সেক্টর অফিসের পক্ষ থেকে পোলিং অফিসারদের প্রতি হুমকি ও ভয় দেখানোর তীব্র বিরোধিতা করা হয় ঐক্য মঞ্চের তরফে৷ জানানো হয়, পোলিং অফিসারদের প্রতি কোন দুর্ব্যবহার বা মানসিক নির্যাতন করা হয় ও কোন অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে তাহলে তার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী থাকবে নির্বাচন কমিশন৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়৷
শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘ওই বুথের পোলিং অফিসারদের সঙ্গে আমরা সরাসরি কথা বলেছি৷ তাঁদের আশ্বস্ত করেছি, পুলিশের হুমকির কাছে মাথা নত না করে আপনারা সরাসরি রিপোর্ট করুন৷ আমরাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করছি। চাকরি খেয়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। এর মোকাবিলা করার জন্য শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ সর্বতোভাবে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। সারা রাজ্যে কোন একজন পোলিং অফিসারের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটল রাজ্যজুড়ে পরিস্থিতি উত্তাল হবে। এঘটনা আবার প্রমাণ করল, সারা রাজ্যজুড়ে ঐক্যমঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ সুনিশ্চিত নিরাপত্তার দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে তা কতটা বাস্তবসম্মত। অবিলম্বে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্বারা ভোট পরিচালনার ব্যবস্থা করুক নির্বাচন কমিশন। না হলে এরকম বহু ঘটনা ঘটতে থাকবে ভবিষ্যতে এবং তার সম্পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।’’