কলকাতা: খাওয়ার শেষ পাতে একটা মিষ্টি না থাকলে বাঙালির রসনা বাসনা দুটোই অপূর্ণ থাকে। মিষ্টি বাঙালির কাছে অমৃত কুম্ভ। মিষ্টি পছন্দ করে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রতিদিন তার খাবারের মেনু থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়নে মিষ্টির দেখা মেলে। কিন্তু কখনো ভেবেছেন মিষ্টিতে লাগানো থাকতে পারে মেয়াদকাল? শুকনো মিষ্টির ক্ষেত্রে অনেক সময় সেই মেয়াদকাল প্যাকেটের গায়ে লাগানো থাকে। কিন্তু খুচরো মিষ্টির ক্ষেত্রে? হ্যাঁ এবার থেকে দোকানের খোলা মিষ্টিতে দিতে হবে উৎপাদনের তারিখ।
এতদিন শুধু বিভিন্ন ওষুধ ও প্যাকেটজাত খাবারের ক্ষেত্রে মেয়াদকাল দেওয়া থাকতো। এবার খুচরো মিষ্টির ক্ষেত্রেও মেয়াদকাল বাধ্যতামূলক করলো কেন্দ্র। আগামী জুন মাসের ১ তারিখ থেকে এই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ দিয়েছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। মেয়াদোত্তীর্ণ মিষ্টি খেয়ে একাধিকবার অসুস্থ হওয়ার ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। এর জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্যাকেটজাত মিষ্টির পাশাপাশি খুচরা বৃষ্টির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
কিন্তু প্রশ্ন খোলা বৃষ্টিতে কিভাবে লেখা থাকবে মেয়াদকাল? ট্রেতে মেয়াদকাল লেখা থাকলে তা গ্রাহকদের চোখে পড়তে নাও পারে। আবার মিষ্টির গায়ে মেয়াদকাল লেখা সম্ভব না। কিন্তু মিষ্টি কতদিন ঠিক থাকবে বা তা কতদিন খাবারযোগ্য তা নির্দিষ্ট করা কিন্তু বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রে এই সিদ্ধান্তের জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন মিষ্টি বিক্রেতারা। তবে তাদের মধ্যে ভিন্ন মত দেখা দিয়েছে। চন্দননগরের বিখ্যাত সূর্য মোদক বা রিষড়ার ফেলু মোদক এর কর্ণধারদের ভিন্নমত। সূর্য মাদকে কর্ণধার এর মতে খুচরো মিষ্টিতে মেয়াদকাল দেওয়া অসুবিধার।
এখানেই আবার ফেলু মোদক এর কর্ণধার বলেছেন, এতদিন প্যাকেটজাত মিষ্টিতে মেয়াদকাল দেওয়া থাকতো এবার খুচরা মিষ্টিতে মেয়াদকাল দিলেও তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে তা অত্যন্ত ভালো। পাশাপাশি তিনি বাজারের মাছ-মাংসের ওপরে ও মেয়াদকাল বাধ্যতামূলক করার জন্য দাবী জানিয়েছেন। ক্ষুদ্র মিষ্টিতে মেয়াদকাল দেওয়া নিয়ে মিষ্টি বিক্রেতা বলেছেন, মিষ্টি কতদিন ভালো থাকবে তা এতদিন মুখেই বলে দেওয়া হত। কিন্তু মেয়াদকালের ট্যাগ লাগানো সব ক্ষেত্রে সম্ভব হয়না।পশ্চিম মেদিনীপুর খড়গপুর ঘাটালের মিষ্টি বিক্রেতা জানান, তাদের বিক্রি করার মিষ্টির গুণগতমান ভালো। ছোট ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে প্রতি মিষ্টির ট্রেতে ট্যাগ লাগান সম্ভব নয়। শুকনো মিষ্টিতে এই কাজ যতটা সহজ রসালো মিষ্টির ক্ষেত্রে ঠিক ততটাই কঠিন।
বিশেষ করে বাংলায় ছানার মিষ্টির প্রচলন বেশি। সেক্ষেত্রে প্রতি মিষ্টির আলাদা আলাদা ট্যাগ করা এক কথায় অসম্ভব। কেন্দ্রের নির্দেশিকা মানতে গেলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়বেন ছোটখাটো মিষ্টি কারিগররা।