কলকাতা: বোলপুরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ নাম না করে অমিত শাহকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তাঁর ছবি বিক্রির একটি টাকাও নেননি৷ এই বিষয়ে প্রমাণও চেয়েছিলেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলল তৃণমূল৷ তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার আয়-ব্যায়ের উৎস্য জানতে ও ওই সংবাদপত্রের অ্যাকাউন্টে নজর দিয়ে আজ, মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়ক মানিক মজুমদারের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই৷ দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে জেরা৷
তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলার’ হিসাবে জানতে আগেই তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার মানিক মজুমদারের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে এবিষয়ে তাঁকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য পেতেই এই অভিযান বলে সিবিআই সূত্র খবর।
জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়ক তৃণমূলের মুখপত্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের দেখেশোনা করেন৷ তিনিও ওই অ্যাকাউন্টের তিন এক জন সিগনেচার অথরিটি হিসাবে রয়েছেন৷ সিবিআই সূত্রে খবর, এদিন ওই অ্যাকাউন্টের সমস্ত লেনদেন খতিয়ে দেখতে চান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা৷ ওই অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে কত টাকা ঢুকছে, কারা কারা টাকা পাঠিয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হয় বলে জানা গিয়েছে৷
সূত্রের খবর, তৃণমূল ইতিমধ্যেই আয়কর বিভাগকে ছবি কেনাবেচার বিস্তারিত হিসাব দিয়ে দিয়েছে৷ যাঁরা ছবি কিনেছেন, তাঁরা চেকে টাকা দিয়েছেন৷ সেই টাকা দলের মুখপত্র জাগো বাংলার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে৷ পুরো বিবরণ নির্বাচন কমিশনের কাছেও দেওয়া হয়৷ ত্রিনেত্র থেকে টাকা পাওয়া নিয়ে সূত্রের বক্তব্য, সব টাকা চেকে এসেছে৷ যাঁরা চেকে টাকা দিচ্ছেন, তাঁরা কারা, কী ধরনের কোম্পানি সে সব তো দল দেখতে যাবে না৷ দিল্লিতে ভোটের আগে আপ-এর অনুদান নিয়ে এ রকমই অভিযোগ উঠেছিল৷ তখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঠিক এই যুক্তিই দিয়েছিলেন৷
তৃণমূল সূত্রে খবর, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নিজের একটি ছবিও বিক্রি করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ছবি বিক্রির একটি নয়া পয়সাও মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যায়নি৷ দলের ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করে এর আগেই তৃণমূলে তরফে দাবি, নিজের আঁকা সব ছবিই দলকে দান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আর সেই ছবি নিয়ে প্রদর্শনী করে জাগো বাংলা পত্রিকা৷ তৃণমূল নেত্রীর আঁকা ছবি নিয়ে মোট পাঁচটি প্রদর্শনী হয়েছে৷ আর ছবি বিক্রির সব টাকাই সর্বভাবরতীয় তৃণমূল কংগ্রেস বা জাগো বাংলার নামে চেকে দেওয়া হয়েছে৷ এই সংক্রান্ত আয়করের কাগজপত্রও রয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷