সিউড়ি: চিনে গিয়েছিলেন পড়াশোনা করতে। কিন্তু আচমকা করোনা ভাইরাসের হামলায় বিদেশে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অবশেষে পরিবারের সমস্ত দুশ্চিন্তা কাটিয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল। ছেলে ফিরে আশায় খুশি মৈনুদ্দিন মণ্ডলের পরিবার। কিন্তু একরাশ উদ্বেগ মেডিক্যালের ছাত্র মৈনিদ্দিনের। কবে ফের চিনে ফিরে গিয়ে ডাক্তারি পড়া শেষ করতে পারবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
২০১৫ সাল, বীরভূমের দুবরাজপুর থানার খণ্ডগ্রাম থেকে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চিনে পাড়ি দিয়েছিলেন যুবক মৈনুদ্দিন মণ্ডল। জিংজিয়ান মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন তিনি। দীর্ঘ চার বছর সেখানে ডাক্তারি পরছেন তিনি। এপ্রিল মাসে ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আর তারপরই জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে হাসপাতালে কাজ শুরু করতেন ওই ছাত্র। কিন্তু হঠাতই ছন্দপতন। শীতকালিন ছুটির মধ্যেই এল এক সমস্যা সৃষ্টি। চিন জুড়ে দেখা দেয় ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। কলেজ কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করে, কোনও পরিস্থিতিতেই যেন ঘরের বাইরে না বের হন পড়ুয়ারা। শনিবার রাতে খন্ডগ্রামে ফিরে আসেন মৈনুদ্দিন। বাড়ির উঠানে বাবা মায়ের সাথে বসেই চিনের ভয়ানক স্মৃতি তর্পন করছিলেন তিনি।
মৈনুদ্দিন বলেন, ‘‘এপ্রিল মাসে আমাদের পরীক্ষা। তারপরই জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে হাসপাতালে কাজে যোগ দিতাম। লেখাপড়া চলছিলো পুরোদমে। কিন্তু হঠাতই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লো। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। নির্দেশ জাড়ি হয় রুমের বাইরে যাওয়া যাবে না। কার্যত গৃহবন্দী হয়ে যায় আমরা। কয়েক দিনের খাবার মজুত ছিলো। কিন্তা তা তো শেষ হবেই। শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরে আসতে পারলাম এটাই অনেক৷’’
তাহলে কি সম্পুর্ন চিন্তামুক্ত? মেডিক্যালের ওই ছাত্রের কথায়, ‘‘চিন্তা তো রয়েই গিয়েছে। আর তো একমাস পর পরীক্ষা তারপর জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে কাজে যোগ দিতাম হাসপাতালে। ফের কবে চিনে ফিরতে পারব জানি না। পরীক্ষার কী হবে? কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কিছুই জানি না। দেখা যাক কি হয়”। তবে মৈনুদ্দিনের মতো এত কথা এখনই ভাবতে রাজি নন বাবা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক, ছেলে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে শুনে খুব চিন্তিত ছিলাম। ছেলে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছে আমরা খুব আনন্দিত৷’’