শুরু হয়েও থমকে গেল শিক্ষকদের পেনশন রিভিশনের কাজ

শুরু হয়েও থমকে গেল শিক্ষকদের পেনশন রিভিশনের কাজ

কলকাতা: শুরু হয়েও লকডাউনের জেরে থমকে গেল শিক্ষকদের পেনশন রিভিউয়ের কাজ৷ সম্প্রতি অনলাইনে কিছু কিছু কাজ শুরু করেছিল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর বা ডিআই অফিসগুলি। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় তাঁদের হাতে এসে পৌঁছয়নি প্রয়োজনীয় নথি৷ ফলে পেনশন রিভিউয়ের কাজ করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হয় তাঁদের৷ যার জেরে থমকে গেল সম্পূর্ণ কাজটাই৷ তাই পুরনো হারে পেনশন নিয়েই আপাতত সন্তুষ্ট  থাকতে হবে কয়েক হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে৷

সংশ্লিষ্ট কিছু আধিকারিক জানান, ডিআই অফিসগুলি উদ্যোগ নিয়ে আনলাইনে কাজ শুরু করলেও, লকডাউনের ফলে কিছু নথি তাঁরা হাতে পাননি৷ ফলে তাঁরা আর কাজ করতে পারছেন না৷ পেনশন রিভিশন না হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ২০১৬ সালের পরবর্তী দু’বছরে অবসর নেওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷  অবসরের সময় পেনশন সংক্রান্ত কাগজপত্র তাঁরা অফলাইনেই জমা দিয়েছিলেন৷ অনলাইন পরিষেবা পুরোদমে চালু হতে ২০১৮ সাল হয়ে যায়। 

সমস্যা হল, অবসর নেওয়া অধিকাংশ শিক্ষকই অনলাইনে ততোটা সড়গড় নন৷ আবার অনলাইনেও দীর্ঘদিন ধরে চলছিল সমস্যা৷ তাই অফলাইনে জমা পড়া নথির সংখ্যা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, অবসরপ্রাপ্তদের জন্য রোপা ২০১৯-এর অর্ডার আসে মার্চের গোড়ার দিকে৷ যেখানে বলা হয়, পরিবর্তিত হারে তাঁরা পেনশন পাবেন ২০১৬ সাল থেকে। কিন্তু তার জন্য যে ‘পেপার ওয়ার্কস’ প্রয়োজন ছিল, লকডাউনের গেরোয় তা আটকে যায়৷ স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় অনলাইনে নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করতে গিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি। 

মাধ্যমিক শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘এই সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। এর জন্য কাউকে দায়ী করা সম্ভব নয়৷ বিপর্যয় না মেটা পর্যন্ত সকলকে অপেক্ষা করতেই হবে। তবে এখন যাবতীয় সরকারি কাজ অনলাইনে হয়ে গিয়েছে৷ তাই সরকারের উচিত প্রতিটি শিক্ষককে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া। কারণ, অনেক কষ্ট করে এই কাজগুলি করতে হয়। প্রধান শিক্ষক হয়ে সমস্যাটা বুঝি।’’

তিনি আরও জানান, অনেক স্কুলেই আইসিটি শিক্ষকদের দিয়ে এই কাজ করানো হয়৷ এর ফলে অনেক সমস্যাও তৈরি হয়৷ কারণ, এই কাজের সঙ্গে সঙ্গে আইসিটি শিক্ষকদের ক্লাসও নিতে হয়। কে কটা ক্লাস নিলেন, তার রিপোর্ট প্রধান শিক্ষককে দিয়ে সই করিয়ে পাঠাতে হয়। নবম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস তো থাকেই৷ এছাড়াও একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নিতে হয় তাঁদের৷ তাঁরা কখন এই কাজ করবেন? বিশ্বজিৎ মিত্রর কথায়, এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আর সব ক্লাস করানোর পরে যদি আইসিটি শিক্ষকদের হাতে এই কাজ ধরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেটাও অন্যায় হবে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − nine =