বাঁকুড়া: দেবতার স্বর্গালোকে তাঁর প্রবেশাধিকার সর্বত্র৷ কিন্তু ঘটা করে কোথাও তাঁর পুজো হয় বলে কি শুনেছেন? না শুনে থাকলে এবং চাক্ষুষ করতে হলে আপনাকে আসতেই হবে এই গ্রামে৷
বাঁকুড়ার অখ্যাত গ্রাম রতনপুর৷ ফি বারের মতো এবারেও সেখানে পাঁচ দিন ধরে নারদ পুজোর ও মেলার বিপুল আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। প্রায় দু’লক্ষ টাকা বাজেট! পুরোহিত চঞ্চল মিশ্র বলছেন, ‘‘সংস্কার, বিশ্বাস যাই বলুন না কেন, নারদের পুজো করে এই গ্রামের হাল ফিরেছে৷ তাই বছর বছর গ্রামের সকলে মিলে এই পুজোর আয়োজন করে আসছেন৷’’
এই পুজোর শুরু কিভাবে? পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা রাজীব ঘোষের দাবি, এই পুজোর পিছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের না-পাওয়ার যন্ত্রনা৷ মনের সেই কষ্ট দেবতাদের কাছে পৌঁছে দিতে নারদকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের কথা ভেবেছিলেন এখানকার শিক্ষিত যুব সমাজ৷ আর তাই অনেক ভেবে স্বর্গারোহী দেবতা আর এই শিক্ষিত যুবকদের যোগসূত্র হিসেবেই নারদেই আস্থা রাখা শুরু।
কারণ, পুরাণে বর্ণিত আছে স্বর্গলোকে কূটকচালির পাশাপাশি ‘বার্তাবাহক’ হিসেবেও প্রবল খ্যাতি রয়েছে নারদের। ঘটনাচক্র, নারদ বন্দনা করার পর থেকেই বদলাতে শুরু করেছে গ্রামবাসীদের আর্থ সামাজিক অবস্থার৷ সরকারি চাকরির দরজা খুলেছে বাঁকুড়ার এই অখ্যাত গ্রামে৷ কাকতালীয় ভাবে গত কয়েক বছরে গ্রামের যুবকদের একের পর কর্মসংস্থান হওয়ায় তার ১৬ আনা কৃতিত্ব তাই মহর্ষি নারদকেই দিচ্ছেন এই গ্রামের মানুষ। ফল স্বরূপ, নারদের প্রতি গ্রামের মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আর ভরসা ক্রমশ বেড়ে চলেছে৷ তারই জেরে বাড়ছে পুজোর জৌলুসও৷