কলকাতা: মঙ্গলবার নিজের শ্যোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গু হল অজানা জ্বর, করোনা হল নিমোনিয়া এবং কিডনির সমস্যা।” বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই পোস্টে রাজনৈতিক ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিগত কয়েকদিন ধরেই তিনি বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেবার বদলে রাজনীতি করছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবশ্য রাজ্য রাজনীতির শুরুর দিকটা এমন ছিল না। বাংলায় সর্বদল বৈঠক হয়েছে, সেখানে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু বেশ কিছু ঘটনা তাল কেটে দিয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত করোনার ত্রান বিলি করার সময় অভিযোগ অনুসারে পুলিশ বাধা দেয়। তাঁকে লিখিত অনুমতি নেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্ত সব্যসাচীবাবু বারবার বলতে থাকেন, বিধাননগরের সিপি তাঁর ফোন ধরেন না, লিখিত অনুমতি নেওয়া রয়েছে। অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর ক্ষেত্রেও। পরে যদিও অভিযোগ করতে গিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন সায়ন্তন। তিনি বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুর সংখাা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যসরকার তথ্য ধামাচাপা দিচ্ছে ঠিক ডেঙ্গির মত।”
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই বিরোধ কেন তৈরি হল? বিজেপি সূত্রে যা খবর, রাজ্য সরকার প্রথমে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লক ডাউন ঘোষণা করার পর অন্যান্য রাজ্যবাসীর ন্যায় বিজেপি নেতারা নিজেদের গৃহবন্দী করে ফেলেন। তারা বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা ছড়াতে থাকেন। দিলীপ ঘোষকে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মতো কাজ করার পরামর্শ দিতেও শোনা যায়। কিন্তু বর্তমানে বিজেপির অভিযোগ, তাদের দলের নেতারা যখন নিজেদের গহবন্দী করে সরকারি নির্দেশ পালন করছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা বাইরে ঘুরে বেরিয়েছেন।
দিলীপ বলেছেন, ” আমাকে অনেক কর্মী জিজ্ঞাসা করছেন, আমরা কেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারব না। স্যোশাল মিডিয়ায় অনেকে লিখছেন, দিলীপ ঘোষ কই। আমরা বীরত্ব দেখাতে চাই না। রাজনীতিও করতে চাই না। ” কিছুদিন আগে সেই কারণে দিলীপ গোষণা করেছেন, দলের প্রতি সদস্য পাঁচ জন আর্তের খাওয়ার দায়িত্ব নেবেন। রাজ্যে পাঁচ কোটি মানুষকে খাওয়াতে চায় বিজেপি। কিন্তু, সেই সময় একটি সমস্য হয়েছে, গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ তাদের ত্রাণবণ্টন কার্যে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। পালটা আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি করছেন এবং মৃত্যুর সংখাা কমিয়ে দেখানো হয়েছে বলে প্রচার শুরু করেছে বিজেপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার প্রতিরোধে মুখ্যমন্ত্রী নিজের লড়াকু মনোভাব ইমেজ হিসাবে মেলে ধরেছেন। একানে তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে। বিজেপি মমতার ইমেজ-বিল্ডিংয়ে বাধা হতে পারেনি। মানুষের পাশে দাঢ়িয়ে মমতা যে বার্তা দিতে চেয়েছে, তা সারা বারত দেখেছে। উপরন্তু মোদী বিরোধীতায় না গিয়ে রাজনৈতিক দূর্দর্শীতার পরিচয় দিয়েছে। আর এখানেই রাজ্য বিজেপির নেতারা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।