কলকাতা: নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের ধরণ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে৷ বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এখনও জোরালো প্রতিবাদ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল। ভোটকর্মীদের সমস্যা ও দুর্দশা যাতে আগামী নির্বাচনে দূর হয় সেজন্য শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। পরবর্তী সমস্ত রকম নির্বাচন পরিচালনায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে সংস্কার ও পরিবর্তনের জন্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে কয়েক দফা দাবি জানিয়ে আবেদনপত্র পাঠিয়েছে শিক্ষক সংগঠন অল পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন৷
করোনা পরিস্থিতিতে ভোট করানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই৷ ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক সংগঠনগুলিও। আগামী লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত-সহ সমস্তরকম নির্বাচনে পদ্ধতিগতভাবে পরিবর্তন চেয়ে কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন এপিজিটিডব্লিউএ। এই নিয়ে অল পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন গরাই জানিয়েছেন, ‘‘ভোট দিতে গিয়ে ভোট কর্মীদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা দূর করতে কমিশনের নির্বাচন পদ্ধতি গুলিতে আমূল পরিবর্তন ও সংস্কার প্রয়োজন।’’ এই বিষয়ে শিক্ষক সংগঠনের তরফে ১১ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে৷
কী আছে ১১ দফা দাবিতে? শিক্ষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ১) ভোট কর্মীদের নিজের সার্ভিস অঞ্চল অথবা বাসস্থানের কেন্দ্রেই ডিউটি ফেলতে হবে। ২) বাতিল করতে হবে ডিসিআরসি প্রক্রিয়া। পিক আপ পয়েন্ট থেকে সরাসরি যে যার বুথ ভিত্তিক গাড়িতে বুথে পৌঁছে যাবেন ভোট কর্মীরা। সেক্টরের মাধ্যমে ভোটিং মেটেরিয়াল বুথে পৌঁছে দিতে হবে এবং ভোটের শেষে মেটেরিয়াল সংগ্রহ করতে হবে। ৩) শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারী নয়, শিক্ষিত বেকারদেরও ভোটকর্মী হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। ৪) প্রতিটি বুথের জন্য চতুর্থ পোলিং অফিসার নিয়োগ করতে হবে। ৫) ভোটের সময় সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করতে হবে৷
শিক্ষক সংগঠনের আরও দাবি, ৬) সমস্ত ভোট কর্মীদের জন্য একঘন্টার লাঞ্চের বিরতি রাখতে হবে। ৭) বুথের আলো, পাখা, জল, বাথরুম-সহ পরিকাঠামোয় সুব্যবস্থা রাখতে হবে। ৮) লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত-সহ সমস্তরকম নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাধ্যতামূলক করতে হবে। ৯) নির্বাচনের কাজে কোনও ভোটকর্মীর মৃত্যু হলে তার পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মৃত ভোটকর্মীর পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। ১০) নির্বাচনের ডিউটি থেকে গুরুতর অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছাড় দিতে হবে। স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করে নিশ্চিত করতে হবে যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের নাম না পাঠায়। ১১) অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফর্ম কমিয়ে ভোট প্রক্রিয়া আরও সরল করতে হবে।