কলকাতা: রাজ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিক ঘাটতি মেটাতে সাধারণ মানুষের কাছে অনুদানের আবেদন জানিয়েছেন সরকারের ত্রাণ তহবিলে। যেখানে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষের পাশাপাশি অনুদান দিচ্ছে ছোট-ডবড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। সরকারের এই সামাজিক সহায়তামূলক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ। অনুদান হিসেবে কর্মচারীদের বেতন থেকে ২৫% টাকা অথার্ৎ এক-চতুর্থাংশ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য আবেদন জানালো এই শিক্ষক সংগঠন। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে সংগঠনটি।
চিঠিতে মমতা সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ, জেলাভিত্তিক করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য পৃথক হাসপাতাল গঠনের সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ। পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজ এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিয়োজিত কর্মীদেরও তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। সরকারের এই বিশাল কর্মকাণ্ডের শরিক হয়ে, প্রশাসনের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করতে চান শিক্ষক সহ অন্যান্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীরাও। তাই সরকারের প্রয়োজনে তাদের সাধ্যের মধ্যে যেকোনো কাজে স্বচ্ছন্দে তাঁদের নিযুক্ত করা হোক এমন আবেদনও জানিয়েছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ।
ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ২৩ টি জেলার ৩৪৪ টি ব্লক, সমস্ত পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় করোনা সম্পর্কে সচেতনতা মূলক প্রচারের পাশাপাশি সরকারী নিয়মবিধি মেনে নিজ নিজ এলাকাতে ত্রাণ বিতরণ করে চলেছে এই শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা। এইমর্মে আরও একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তাহলো, আপৎকালীন পরিস্থিতি চলাকালীন শিক্ষকদের বেতনের ২৫% যে অর্থ অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে তা যেন রাজ্যের দরিদ্র সীমার নীচে থাকা সাধারণ মানুষের স্বার্থে, বিশেষত দিনমজুরদের সহায়তায় কাজে লাগানো হয়। অন্যান্য শিক্ষক সংগঠন এবং কর্মচারী সংগঠন এই প্রস্তাব আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবে এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখবে বলেও আশাবাদী তাঁরা। তবে চিঠিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারকে একথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছ যে বেতন এবং মহার্ঘ ভাতার দিক থেকে দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় তাঁরা বঞ্চিত, তবুও এই আপদকালীন পরিস্থিতিতে তারাও রাজ্য প্রশাসনের পাশে থাকবে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকারী সাহায্য ঘোষণা করার পরেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা। পর্যাপ্ত সরকরি সাহায্য সঠিকভাবে সবস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না বলেও তাঁদের কাছে খবর আছে তাই সেদিকে আরো নজরদারী বাড়ানো দরকার বলেও আবেদন জানানো হয়েছে এই শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন হল সমাজকর্মী হিসাবে রাজনৈতিক দলগুলির ফান্ড এবং মন্দির ও মসজিদ সহ ধর্মস্থানগুলির সম্পত্তি এইমহুর্তে মানবসভ্যতা বাঁচানোর কাজে লাগানো হোক৷