পুজো কমিটিকে অনুদান বাড়াল রাজ্য, সঙ্গে আরও সুযোগ সুবিধা! ফের সমালোচনা বিরোধীদের!

পুজো কমিটিকে অনুদান বাড়াল রাজ্য, সঙ্গে আরও সুযোগ সুবিধা! ফের সমালোচনা বিরোধীদের!

puja committee

নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই দুর্গাপুজো। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। তার আগে রাজ্যের প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে সত্তর হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবার অঙ্কটা ছিল ষাট হাজার। এমনিতেই সরকারের ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। তার উপর নতুন করে বিপুল বোঝা চাপল রাজ্যের ঘাড়ে। সদ্য ইমাম, মোয়াজ্জেম ও পুরোহিতদের মাসিক ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।‌ তখনই বোঝা গিয়েছিল এবার পুজো অনুদানও বাড়াবেন তিনি। সেটাই সত্যি হয়েছে। ঘটনা হল রাজ্যের নানা প্রান্তে এমন কিছু পুজো রয়েছে যাদের বাজেট রীতিমতো আকাশ ছোঁয়া। তাই কিসের ভিত্তিতে তাদেরও অনুদান দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছিল, এখনও উঠছে।

রাজ্যে প্রতি বছর বেকার সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। সেই জায়গা থেকে এভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুদান দেওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। পুজো কমিটিকে শুধু অনুদান বাড়ানোই নয়, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর তাদের বিজ্ঞাপন দেবে। সেই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং মন্ডপে দেখা যাবে। সেখান থেকেও টাকা আয় করবে পুজো কমিটিগুলি। এখানেই শেষ নয়, প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে বিদ্যুৎ বিলে বিপুল ছাড় দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ  সব অর্থে দানছত্র চরমসীমায় পৌঁছে গিয়েছে।

জেলায় জেলায় যখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করেন তখন নানা ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য জনপ্রতিনিধিরা আবেদন করে থাকেন তাঁর কাছে। কখনও নদী বা খাল সংস্কার, নতুন বিল্ডিং তৈরি, স্কুল ভবন বা বাজার সংস্কার-সহ নানা আবেদন করতে দেখা যায় তাঁদের। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী টাকার অভাবের কথা বলে সেগুলিতে এখনই সবুজ সংকেত দিচ্ছেন না। তাই সেই জায়গা থেকে প্রতি বছর যে বিপুল অঙ্কের অনুদান দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই। রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত ভোটের টানেই মুখ্যমন্ত্রী অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়েই চলেছেন।‌ যা ডোল-পলিটিক্স হিসেবে পরিচিত।

যথারীতি এবারেও মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুদান রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। ওয়াকিবহাল মহল মনে করে প্রতি বছর যে কোটি কোটি টাকা মুখ্যমন্ত্রী অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমে, তা দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো যেত। প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ করা যেত একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।‌ তাতে রাজ্যের সামগ্রিক ছবিটা পুরো বদলে যেতে পারত। ভিন রাজ্য এবং এমনকী বিদেশ থেকেও আরও শিল্প আসার সম্ভাবনা তৈরি হতো। সেই জায়গা থেকে রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষকে চাকরির বদলে অনুদান পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুজো অনুদান খাতে যেভাবে টাকা বাড়ানো হল তা নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা শুরু হয়েছে সব মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =