কলকাতা: রাজ্যে পুরভোটের দিনক্ষণ আগামী সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে। দোলের ছুটির পরে নবান্নে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে বৈঠকে বসবেন প্রশাসনের কর্তারা। ওই বৈঠকেই ভোটের চূড়ান্ত দিনক্ষণ স্থির করে তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। তার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে পুরভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। নবান্নে বৈঠকের পাশাপাশি ভোটের দিনক্ষণ ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনও আগামী সপ্তাহেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকছে। শুক্রবার ওই বৈঠক হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে কমিশনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। বৈঠকের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে সব স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি পাঠাবে। এরকম ১০ টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দল কে চিঠ পাঠানো হবে বলে ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন।
এপ্রিল মাসেই পুরসভা ভোট করার লক্ষ্য সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে কবে পুরভোট হবে তা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও বাকি রয়েছে। পুরভোট ইভিএম-এ হবে নাকি ব্যালটে, তা নিয়েও স্পষ্ট উত্তর নেই কমিশনের কাছে। এপ্রিল মাসের যেকোনো সময় পুরসভা নির্বাচন হতে পারে ধরে নিয়ে আগেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসনকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলাশাসকদের প্রশাসন ও কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার কথা বলা হলেও সমগ্র নির্বাচন ইভিএম না ব্যালট পেপারে হবে তা নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি বলে সূত্রের খবর। তবে এই প্রথম অনলাইনের মাধ্যমে পুরভোট সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রার্থীর সম্পূর্ণ হলফনামা এবার আপলোড করতে হবে অনলাইনে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই রাজ্যে পুরসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হবে তাও একপ্রকার চূড়ান্ত বলেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। এদিকে নবান্ন সূত্রেও খবর এপ্রিলেই কলকাতা সহ রাজ্যের ১১০টি পুরসভার নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা । কলকাতা সহ ছ’টি পুর নিগম এবং ১০৪টি পুরসভার ভোট একই সঙ্গে সেরে ফলতে চায় রাজ্য সরকার।সেই মোতাবেকই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী, রাজ্যের হাতে পুর নির্বাচনের দিনক্ষণ স্থির করার ক্ষমতা রয়েছে।তবে তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করার কথা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। পুরসভা, পঞ্চায়েতের মত স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচনে কমিশন ও সরকারের মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে আগে জটিলতা তৈরি হয়েছে। পুর আইনের এই অংশকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালে হাইকোর্টে মামলাও করেন তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। কিন্তু তারপরেওসমস্যা মেটেনি । পুর নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সিংহভাগ ক্ষমতা রাজ্যের হাতেই রয়ে গিয়েছে । সূত্রের খবর সেই সীমাবদ্ধতার জন্যেই পুর নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেও নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারছে না কমিশন। তবে পুর নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসনগুলির জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷
কমিশনের নির্দেশিকা, জেলা প্রশাসনগুলিকে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। ভিডিওগ্রাফির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ১৪০০-র বেশি ভোটার থাকলেই অতিরিক্ত বুথ তৈরি করতে হবে। যত বেশি সম্ভব মডেল বুথ তৈরিরও পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। অভিযোগ জানানোর ওয়েবসাইট 'জেমস' আপডেট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।