কলকাতা: বিগত দুদিনে রাজ্যে আরও ১২ জন নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই মৃত ও সুস্থ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বাদ দিলে সোমবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ৬১ জন করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে এই তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সময় রাজ্যে নতুন করে কোনও কোরোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়নি বলেও তিনি জানান। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ‘বর্তমানে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৬১ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫৫ জন ৭ টি পরিবারের সদস্য। এখনো পর্যন্ত রাজ্যে আক্রান্তদের মধ্যে ৯৯ শতাংশের বিদেশ যোগ রয়েছে।’
একই সঙ্গে রাজ্যে করোনায় আক্রান্তদের সুস্থতার হার নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে ইতিমধ্যেই ১৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।বর্তমানে চিকিৎসাধীন আরো ১৭ জনের মধ্যে ১২ জন সুস্থতার পথে।কালিম্পিঙএ একই পরিবারের আক্রান্ত দশ জনের মধ্যে ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।একজন রোগীকে বাদ দিলে রাজ্যে বাকি সব করোনা আক্রান্তের অবস্থাই ভালো।’মানুষকে আশঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,সতর্কতা অবলম্বন করলে আগামী দিনে এই মহামারীর হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে।
অন্যদিকে মহামারী নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল রাস্তায় নেমে থালা কাঁসর বাজিয়ে রাজনীতি করছে। ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। এটা রাজনীতি করার সময় নয়।রাজ্যে চিকিৎসার কাজ হচ্ছে এবং নতুন পথ খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওষুধের কোনও অভাব হবে না বলে আশ্বাস দেন তিনি। মমতা জানান, রাজ্য ৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৯০০টি পিপিই বাকি আছে আসা। ২ লক্ষ ৭ হাজার ১০০ হাতে পাওয়া গিয়েছে। মাত্র ৩ হাজার পিপিই কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পিপিই-র হলুদ রং নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অন্যদিকে, ৫ লক্ষ এন ৯৫ মাস্ক কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে মাত্র ১০ হাজার মাস্ক পাঠানো হয়েছে বলে জানান মমতা। ৭ লক্ষ ৯২ হাজার মাস্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। ৭৮ হাজার হাতে এসেছে। বাকিগুলি তৈরি করা হচ্ছে। টু লেয়ার মাস্কেরও অর্ডার দেওয়া হয়েছে। সোমবারও আরও বেশ কিছু মাস্ক হাতে এসেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যে ৫৪ হাজার ৮২৩ জন মানুষ হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন। সেখানে সরকার নজরদারি চালাচ্ছে। ৫১১ টি সরকার সেফ হাউজ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সরকারের নজরদারিতে রয়েছেন ৬ হাজার ৮৭৯ জন। ৪ হাজার ১০ জনকে ছাড়া হয়েছে।পুলিশের উপর ভরসা রাখার আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশংসা করেছেন পুলিশের রক্তদান শিবির নিয়ে। দমকলের কাজ নিয়েও প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী।