হাওড়া: মাসখানেক আগে বর্ধমানের স্টেশন বিল্ডিংয়ের একাংশ ভেঙ্গে পড়ে। এই ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসেছে রেল। রেলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাদের আওতাধীন বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা হবে। সেই মতো রেলের পক্ষ থেকে শুরু হয় বাড়ি ভাঙা। রেলের নির্দেশে এই বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে অবশেষে আন্দোলনের পথে হাঁটলেন হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় বিএনআর রেল কোয়ার্টারের প্রায় শতাধিক পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের কোয়ার্টার খালি করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে আরপিএফ সেখানে এলে রেল কোয়ার্টারের বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের দাবি বিকল্প ব্যবস্থা না হলে তারা এখান ছেড়ে কোথাও যাবেন না। বাসিন্দারা এদিন দাবি করেন তাঁরা কয়েক দশক ধরে এখানে বসবাস করছেন। কারও বাবা, কারও দাদা বা নিকটাত্মীয় রেলে চাকরি করতেন। তখন থেকেই তারা এখানে বসবাস করছেন। তাদের এখানকার ঠিকানায় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান সব রয়েছে। এখন তারা কোথায় যাবেন। এদিকে, এদিন এদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা। তিনি ফোনে ডিআরএমকে এদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা বলেন, “এরা এখানে প্রায় ৫০-৬০ বছর ধরে বসবাস করছেন। সকলের ভোটার কার্ড রয়েছে। আধার কার্ড রয়েছে। এদের পরিবারের ছেলেমেয়েরা এবার কেউ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এদের বাবা মা সারাজীবন এখানে ছিল। তারা অবসরের পর তাদের ছেলেমেয়েরাও বড় হয়ে আজকে এখানে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এদের এভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। বিকল্প ব্যবস্থা না করে বলপূর্বক এদের উচ্ছেদ করা যাবে না। আমি ডিআরএম, আরপিএফ-র সঙ্গে কথা বলেছি। আজকে আরপিএফ এসেছিল। আমি বলেছি বাড়ি মেরামতের প্রয়োজন থাকলে আমি প্রয়োজনে এক লক্ষ টাকা দিচ্ছি। বাড়ি মেরামত করে এদের এখানেই থাকার ব্যবস্থা করা হোক। জোর করে বাড়ি খালি করে দিয়ে উচ্ছেদ করা যাবে না। ডিআরএম বলেছেন আপনি চিঠি দিন। আমি দেখব।”
এই ব্যাপারে হাওড়া ডিভিশন রেলওয়ে ম্যানেজার ইশা খান বলেছেন, “ইস্টার্ন রেলের পুরোনো বাড়িগুলি অবস্থা দেখা দেখা হচ্ছে। ইস্টার্ন রেলের আওতাধীন সকল বাড়িগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি কোন দখলদারি থাকলে থাকলে তাও ভেঙে দেওয়া হবে”। বর্ধমানের ঘটনার পরই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে তিনি।