লাঙল যার ক্ষতিপূরণ তাঁর! নয়া ক্ষতিপূরণ নীতি নবান্নের

লাঙল যার ক্ষতিপূরণ তাঁর! নয়া ক্ষতিপূরণ নীতি নবান্নের

কলকাতা: জমির নথি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যাতে বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত না হন তা সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্নের দাবি এতদিন জমির পরচা না থাকার জন্য বহু কৃষক ঝড়ে ফসল হারালেও ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারছিলেন না। সেকারণে নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে। এখন থেকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের নামে জমির দলিল বা পরচা না থেকে যদি তার পূর্বপুরুষের নামে থাকে তবে শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের দেওয়া ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কৃষক ক্ষতিপূরণের আবেদন জানাতে পারবেন।

ভাগচাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সেই জটিলতা মেটাতে স্থির করা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে চাষ করা কৃষককেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। চুক্তির ভিত্তিতে পুরদস্তুর অন্যকে চাষ করতে দেওয়া জমির মালিক ক্ষতিপুরণ পাবেন না। কৃষি দপ্তরের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, গ্রামের গরিব কৃষকদের অধিকাংশই পৈতৃক জমিতে চাষবাস করেন। খরচের কথা মাথায় রেখে অনেকে জমির মিউটেশন করান না। ফলে পরচায় বাপ-ঠাকুর্দার নাম থেকে যায়। তার জেরেই বুলবুলের ক্ষতিপূরণ পেতে সমস্যা হচ্ছিল অনেক কৃষকের।

বুলবুল আছড়ে পড়ার পরে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই খাতে মোট ১,৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ দপ্তর। তার মধ্যে মাত্র ৬০০ কোটি টাকা এখনও পর্যন্ত বিলি করা সম্ভব হয়েছে। 'ক্রপ রিহ্যাবিলিটেশন রিলিফ'-এ বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি হেক্টরে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে রাজ্য। সর্বোচ্চ দু'একর জমির ক্ষতিপূরণ মিলবে। অর্থাৎ, একজন চাষি সর্বোচ্চ ২৭ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। জমির পরিমাণ কম হলেও ন্যূনতম এক হাজার টাকা মিলবে।

নবান্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুলবুলের আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য এ পর্যন্ত মোট ২৫ লক্ষ ৫৮ হাজার কৃষক ফর্ম সংগ্রহ করেছেন। গত সোমবার পর্যন্ত প্রায় ১৯ লক্ষের মতো আবেদনের স্ক্রুটিনি শেষ হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে পেয়েছেন ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার জন। বাকিরা খুব দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাবেন বলে কৃষি দপ্তরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + eighteen =