নয়াদিল্লি: রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে অবশেষে ১লা জুন ২০২০ থেকে দেশজুড়ে বাস্তবায়িত হতে চলেছে মোদি সরকার প্রস্তাবিত 'এক জাতি এক রেশন কার্ড'। এর ফলে একটাই কার্ড ব্যবহার করে উপভোক্তারা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন। গত বছর নভেম্বরেই এবিষয়ে রাজ্যগুলিকে জানিয়েছিল দিল্লি। সোমবার এক সংবাদিক বৈঠকে দেশ জুড়ে এই কার্ড চালু করার কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ে ১২ টি রাজ্যে প্রাথমিকভাবে এই কার্ডের ব্যবহার শুরু হয়েছে যার দ্বারা ৩৫ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছেন। এরপর ৮টি রাজ্যে চালু হলেমোট ৬৩কোটি মানুষ এর আওতায় আসবেন। ১লা জুন থেকে দেশজুড়ে এই কার্ড কার্যকর হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন এই প্রকল্প তিন দফায় বাস্তবায়ন করা হবে। রাজ্যগুলিকে দুটি ভাষায় স্ট্যান্ডার্ড রেশন কার্ড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি হিন্দি বা ইংরেজিতে যেকোনো একটি ভাষা ব্যবহার করা যাবে।
এর ফলে জাতীয় পর্যায়ে রেশন কার্ড ব্যবহারের সুবিধা হবে। রাজ্যগুলিকে একটি ১০-সংখ্যার রেশন কার্ড ইস্যু করতে বলা হয়েছে, যার মধ্যে প্রথম দুটি সংখ্যা হবে রাষ্ট্রীয় কোড এবং পরবর্তী সংখ্যাটি রেশন কার্ড সংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে হবে। এতে, পরবর্তী দুটি সংখ্যা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের পরিচয় হিসাবে রেশন কার্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট ফরম্যাট মেনে প্রতিটি রাজ্যকেই এই কার্ড তৈরীর কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই যে রাজ্যগুলিতে এই কার্ড চালু হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক, কেরল, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, ত্রিপুরা, গুজরাট এবং ঝাড়খণ্ড। এপর্যন্ত আংশিকভাবে যে রাজ্যগুলিতে কার্ডের ব্যবহার শুরু হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে উত্তর প্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা এবং ছত্তিসগড়। পাসোয়ান আরও জানিয়েছেন যে সারা দেশে রেশন কার্ডের উপভোক্তার সংখ্যা ৮১ কোটি, যারা ২ টাকা কেজি দরে গম এবং ৩ টাকা কিলো দরে চাল দেওয়া হয়। এই গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে ৬১০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য সরবরাহ করে কেন্দ্র। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়।
রেশন কার্ডের স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে রাম বিলাস বলেন যে দেশজুড়ে প্রায় তিন কোটি জাল রেশন কার্ড পাওয়া গেছে, এর মধ্যে ৪৪,৪০৪ টি কার্ড বিহার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং এই জাল কার্ড বাতিল হয়য়ায় সরকার প্রায় তিন কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে।