কলকাতা: মাত্র এক বছরের পার্থক্য। তার মধ্যেই ৭ লক্ষের বেশি ছাত্র-ছাত্রী কমেছে উচ্চ প্রাথমিকে অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে। ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার এই প্রবণতা বেশি সংখ্যালঘু, আদিবাসী, তফসিলি জাতি এবং অন্য অনগ্রসর শ্রেণির পরিবারগুলির মধ্যে। পড়ুয়া কমার প্রবণতা রয়েছে সাধারণ পরিবারেও। ছাত্র-ছাত্রী কমে যাওয়ার এই প্রবণতা স্বীকার করে নিয়েছে রাজ্য সরকারও। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরে জমা পড়া সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্টে এই প্রবণতা তথ্য, পরিসংখ্যান সহ উপস্থাপন করা হয়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উচ্চ প্রাথমিক পর্যায়ের পর মাধ্যমিক। উচ্চ প্রাথমিক পর্যায় থেকেই মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়, এমনই শিক্ষকদের বক্তব্য। সেই স্তরে ভর্তির সংখ্যা হ্রাস স্কুলছুটের বিষয়টিকে আরও জোরদার করছে। কতটা আশঙ্কাজনক অবস্থা, তার জন্য দু’টি জেলার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্ট জানাচ্ছে, উত্তর দিনাজপুর জেলার কোথাও কোথাও উচ্চ প্রাথমিক পর্যায়ে স্কুলছুটের হার ১৬ শতাংশের বেশি হয়েছে। মালদহে এমন এলাকা পাওয়া গিয়েছে, যেখানে স্কুল ছেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি ছাত্রছাত্রী। ২০১৫-১৬ সালে ৬৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৬৬ জন পড়ুয়া ভর্তি হলেও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে হয়েছে ৫৬ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৪ জন। তফাত ৭ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭০২ জনের।
কেন কমছে ছাত্র-ছাত্রী? এর কারণ খোঁজারও চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্ট উল্লেখ করেছে, ২০১৭-র আগস্ট থেকে সমীক্ষা করার সময়ে দেখা গিয়েছে, কাজের খোঁজে গ্রাম ছেড়ে যেতে হয় অনেক পরিবারকে। মূলত বড় শহরের দিকেই সেই পরিযায়ী পরিবারগুলির যাত্রা। সেই পরিবারগুলির শিশু-কিশোররা হচ্ছে স্কুলছুট। এছাড়া শিক্ষা মহলের একাংশের মতে, অপ্রতুল সংখ্যক শিক্ষক এর অন্যতম কারণ। স্বচ্ছল পরিবারগুলি ভরসা করতে পারছে না সরকারি স্কুলের উপর। প্রসঙ্গত, তৃণমূল সরকারে আসার পর দ্বিতীয় দফায় শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়মিত না হওয়ায় স্কুল বিমুখ হচ্ছে পড়ুয়ারা।