কলকাতা: ‘তবু ভালো থাকিস’ নেট দুনিয়ায় এখন ভাইরাল এই কবিতাটি৷ কারণ স্বনামধন্য কবি এবং সাহিত্যিক নবনীতা দেব সেনের প্রয়াণ৷ এটাই তো স্বাভাবিক৷ কবির নামের জায়গায় যখন নবনীতা দেব সেন, তখন তার এই কবিতাটি শেয়ার করা সময়োপযোগী বলেই মনে করেছেন নেটিজেনদের একাংশ৷ তবে একেই হয়তো বলে খ্যাতির বিড়ম্বনা৷
এখন এই কবিতাটিই হয়ে উঠেছে কবিতার প্রকৃত ও তরুণ প্রজন্মের এক কবি নবনীতা সেনের কাছে৷ ওনার নাম শুধু ‘নবনীতা’ নয় পদবীও যে ‘সেন’৷ শুধু নাম আর পদবীর মাঝে নেই একটি শব্দ ‘দেব’ যা প্রয়াত কবি-সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের পৈতৃক পদবী৷ পরে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিয়ের পর ‘দেবসেন’ হয়েছেন৷ আর এখানেই তৈরি হয় ধন্দ্ব৷ তাঁর প্রয়াণের পর অবলীলায় নতুন প্রজন্মের কবি নবনীতা সেনের লেখা ‘তবু ভালো থাকিস’ কবিতাটি শয়ে শয়ে শেয়ার হয়েছে নেট দুনিয়ায়৷
কবি নবনীতার দাবি, এই ঘটনা প্রায় দশ মাস ধরে ঘটে আসছে৷ নবনীতা দেবসেন জীবিত থাকাকালীন৷ তার কবিতার সঙ্গে নবনীতা দেবসেনের নাম জুড়ে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে৷ ঘটনায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত নবনীতা৷ নিজের কবিতা এভাবে অন্য এক কবির নামে প্রচারিত হওয়ার রীতিমত ক্ষুব্ধ তিনি৷
ফেসবুকে নিজের পেজে নবনীতা ‘লিখেছেন এ অপমান যেন আর নেওয়া যাচ্ছিল না৷ দিদির মত একজন স্বনামধন্যা সাহিত্যিকের নাম যেমন আমার মত অনভিজ্ঞ এক ছাপোষা মানুষের লেখার সাথে জড়িয়েছে তেমনি আমার নিজের সৃষ্টি ও তো তার সঠিক স্বীকৃতি পায়নি৷’’ তবে এটি সংশোধনের উপায়ও বলেছেন তিনি৷
সেটি হোল, ইউটিউবে গিয়ে বাংলায় ‘তবু ভালো থাকিস কবিতা’ দিয়ে সার্চ করে যে কটি ভিডিও তে কবির নাম নবনীতা দেব সেন লেখা বা বলা আছে, সেগুলোকে রিপোর্ট করা৷ কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি৷ এমনকি তার নিজের লেখা কবিতা নিয়ে তাকেই সন্দেহ, বিদ্রূপ, ব্যাঙ্গাত্মক কমেন্ট করা হয়েছে৷ অবশেষে পাশে পেয়েছেন একজনকে তার মনের কথা জোরালো ভাষায় তুলে ধরার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন তাকে৷ নবনীতা আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘আমার ধারণা তিনি বেঁচে থাকাকালীন এই পোস্টটি তাঁর নজরে পড়লে, সবার আগে শেয়ার করতেন তিনিই!’’
ফেসবুক বা এইধরণের স্যোশাল মিডিয়ায় নানান বিভ্রান্তি তৈরি হয় হঠকারিতা থেকে৷ সে সাম্প্রতিক খবরই হোক অথবা নবনীতার মত কোনও ঘটনা৷ সেক্ষেত্রে যাচাইয়ের বিষয়টাতে জোর দেন ক’জন? তবে নবনীতা সেনের মত এক তরুণ কবির সঙ্গে যা ঘটে চলেছে তার থেকে শিক্ষা নিতে হবে তরুণ প্রজন্মকেই৷ যারা বিভ্রান্তি তৈরি করছেন তাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে এই বিভ্রান্তি দূর করতে৷ ভবিষ্যতে নিজেদের কখনও যেন এমন বিভ্রান্তির শিকার হতে না হয় তাই এই অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে স্যোশাল মিডিয়াযর মাধ্যমেই৷