নিজস্ব প্রতিনিধি: গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কয়লা পাচার, গরু পাচারের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। শাসকদলের বেশ কয়েকজন এই সমস্ত ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। জল্পনায় আরও বহু নাম উঠে এসেছে। আর সেই সূত্রেই রাজ্যের এক অত্যন্ত প্রভাবশালী চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন। শোনা যাচ্ছে তিনি পাচারের টাকার একটা বড় অংশ রাশিয়ার এক মডেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত রেখেছেন।
সেই বিদেশিনী বর্তমানে লন্ডনে থাকেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন বলে সূত্রের খবর। এরকম অনেকের কাছে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পৌঁছে গিয়েছে বলে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। এর আগে দুর্নীতির টাকা থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে অভিযোগ তুলে রাজ্যের এক প্রভাবশালীর দিকে বহুবার আঙুল তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই প্রশ্ন, চুরির টাকা কোথায় যায়নি তাহলে? সেই সঙ্গে আমজনতা প্রশ্ন তুলছে, যদি সত্যিই তদন্তকারী আধিকারিকরা বিষয়গুলি নিয়ে নিশ্চিত থাকেন, তাহলে মূল মাথারা ধরা পড়ছেন না কেন? তবে কি তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই? যা সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে তার কি আদৌ কোনও সত্যতা নেই? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? এই সমস্ত প্রশ্ন অবধারিতভাবে উঠছে।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ ধরা পড়ার পর টাকা কোথায় কোথায় গিয়েছে, কোথায় কোথায় সেই টাকা খাটানো হয়েছে, তা নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দারা পেয়েছেন বলে জানা যায়। আর সেই তদন্তের সূত্র ধরেই রাজ্যের সেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নাম উঠে এসেছে বলে সিবিআই এবং ইডি সূত্রে খবর। যদিও সেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম প্রকাশ্যে আনেননি কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কিন্তু তাতে চর্চা থেমে নেই। বিরোধীরা নানাভাবে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না তাঁকে। যদিও এই বিষয়গুলি আজ নতুন কোনও ঘটনা নয়।
বহুদিন ধরেই শাসক-বিরোধীর মধ্যে এই ইস্যুতে চাপানউতোর চলছে। যা দেখে গা সওয়া হয়ে গিয়েছে আমজনতার। বলা যায় গোটা বিষয়টি নিয়ে আমজনতা আজ তিতিবিরক্ত। তারা সবাই রেজাল্ট চায়। দিনের পর দিন তদন্ত চলবে, কোথায় কোথায় টাকা গিয়েছে তা নিয়ে নানা খবর শোনা যাবে, অথচ মূল মাথারা ধরা পড়বেন না, এ কেমন কথা? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই করছে আমজনতা। কিন্তু তার সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিভিন্ন চুরির টাকা দেশের মধ্যে বা দেশের বাইরে কার কার কাছে গচ্ছিত আছে, সেটা যদি সত্যিই জানা গিয়ে থাকে, তাহলে মূল অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক, এমন আওয়াজ ফের নতুন করে উঠতে শুরু করেছে। সেটা কি আদৌ হবে? নাকি যেমন চলছে তেমনটাই চলবে? একমাত্র সময়ই এর উত্তর দিতে পারবে।