কলকাতা: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন শশী পাঁজা৷ শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নারী, শিশুকল্যান ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী৷ এখনও পর্যন্ত বাংলার বকেয়া টাকা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ শশী পাঁজা বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে এদিন বলেন, ‘‘করোনা ও আমফানের মতো এত বড় লড়াইয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে আমরা কোনও সাহায্যই পেলাম না।’’
বৈঠকে তিনি জানান, ‘‘জুন ২০২০-এর আগে রাজ্য মোট ১২০০ কোটি টাকা আর জুন ২০২০-এর পরে ২৮০০ কোটি ব্যয় করেছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু একটা টাকাও কেন্দ্রের কাছে থেকে পায়নি রাজ্য।’’ কেন্দ্রের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘কোভিড মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে কোনোরকম সাহায্য করেনি কেন্দ্র। আমরা মোট ৫০ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পাই৷’’
তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, ‘‘আমাদের প্রাপ্য সাহায্য থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে৷ বাংলা কেন বঞ্চিত হবে? আমরা তো ভিক্ষা চাইছি না৷ যে টাকা আমরা চাইছি সেটা বাংলা মানুষের প্রাপ্য টাকা৷ আমফানের মোকাবিলায় রাজ্য নিজের পকেট থেকে ৬৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছে৷ সেই সময়েও কোনও সাহায্য পাইনি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।’’
মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর পরপরই দক্ষিণ কোচবিহারের বিধায়ক মিহির গোস্বামী নিজের পথ থেকে ইস্তফা দেন৷ তারপর দিল্লিতে গিয়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেন৷ হাতে তুলে নেন গেরুয়া পতাকা৷ একই দিনে নিজের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা উস্কে দেন ব্যারাকপুরের দুবারের বিধায়ক মুকুল ঘনিষ্ঠ শীলভদ্র দত্ত৷ বিজেপি রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তাই এবার করোনা ও আমফানের বকেয়া টাকাকে হাতিয়ার করে পাল্টা আঘাতের খোঁজে জোড়াফুল শিবির৷
যদিও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে করোনা ও আমফান মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি৷ আমফানে সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা বণ্টন ঘিরে ব্লকে ব্লকে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছে বিজেপি৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল৷ তারপরও অসন্তোষ মেটেনি৷ আমফানের তাণ্ডব শেষ হলেও কমেনি বঙ্গ রাজনীতির উত্তাপ৷ তার উপরে রয়েছে করোনা সংক্রান্ত গুচ্ছ অভাব-অভিযোগ৷ এবার এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরাসরি অসহযোগিতার অভিযোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷