মালদা: মিলেছে ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি৷ কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি৷ অবশেষে একাধিক দাবি দাওয়া জানিয়ে রাতুয়া ২ ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও)-এর কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেন গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা৷
সারা বঙ্গ গ্রামীণ সম্পদ কর্মী সংগঠনের পক্ষ থেকে পেশ করা স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ সালে সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ পরীক্ষা পদ্ধতি মেনে গ্রামীণ সম্পদ কর্মী (এসএভিআরপি) পদে নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁদের৷ পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে সোশ্যাল অডিট দফতরের সকল ভিপিআর-রা রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে তাঁদের কাজের দক্ষতার পরিচয় দিলেও তাঁরা সুবিচার পাচ্ছেন না৷ অভিযোগ, যে কাজ বছরে দু’বার হওয়ার কথা, সে কাজ বছরে একবার দেওয়া হচ্ছে৷ স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামীণ কর্মীদের বছরে ২৪০ দিন পতঙ্গবাহিত রোগ নির্ণয়ের কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন৷ সেই কাজ তাঁরা দায়িত্বের সঙ্গেই পালন করছেন৷ এর জন্য দিনের শেষে ১৭৫ টাকা তাঁরা পারিশ্রমিক পান৷ মাসে ২০ দিনের বেশি কাজ জোটে না৷ ফলে মাস গেলে রোজগার হয় মাত্র ৩,৫০০ টাকা৷
আরও পড়ুন- লকডাউনে ক্লাস নিয়ে কেঁদে ফেললেন ‘হেনস্থা’র শিকার হওয়া প্রধান শিক্ষক!
তাঁরা আরও জানান, বাড়ি পরিদর্শন করতে গিয়ে যদি কোনও এসএভিআরপি কর্মী রোগাক্রান্ত হন কিংবা কর্মরত অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়, তাহলে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয় তাঁদের পরিবারকে৷ ভিবিডিসি, কোভিড-১৯ ছাড়াও জয় বাংলা খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্য সাথী, আম্পান পরবর্তী পরিস্থিতিতে মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, ভোটার ভেরিফিকেশন, কৃষক বন্ধু, ফসল বীমা, বাড়ি বাড়ি ফুড কুপন ডিস্ট্রিবিউশন প্রভৃতি কাজও করত হয় তাঁদের৷ অথচ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটছে গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের পরিবারের৷ এই পরিস্থিতিতে কাজের নিশ্চয়তা প্রদান ও স্থায়ীকরণ, সম্মানজনক বেতনের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, নবান্ন, পঞ্চায়েত দফতর, স্বাস্থ্য দফতর সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে এই স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে৷ তাঁরা জানান, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের পর গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের সিস্টেমের মধ্যে এনে মাসিক বেতনের ব্যবস্থা করা হবে৷ সেই প্রতিশ্রুতি পালনের অপেক্ষায় রয়েছেন এসএভিআরপি-রা৷
মোট ছ’ দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷ সেগুলি হল-
১. মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এসএভিআরপি-দের সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে৷
২. এসএভিআরপি-দের ১০০ শতাংশ সামাজিক নিরীক্ষার কাজে যুক্ত করতে হবে৷
৩. এসএভিআরপি-দের কর্ম নিশ্চয়তা প্রদান ও স্থায়ীকরণ করতে হবে৷
৪. স্পর্শকাতর ডেঙ্গু ও কোভিড-১৯ অতিমারির কাজের জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷
৫. এসএভিআরপি-দের স্বাস্থ্যসাথী ও জীবন বিমা চালু করতে হবে৷
৬. সরকারি কর্মচারীর সমমর্যাদা দিতে হবে৷
আরও পড়ুন- ওসি’র নাকি করোনা, গুজবে মাছি তাড়াচ্ছে থানা! রাতারাতি উধাও থানায় ভিড়