রামপুরহাট: ধানের বীজতলা তছনছ করে দেওয়া হচ্ছে। ভারী ভারী ডাম্পারে আনা হচ্ছে পাথরের গুঁড়ো। তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে উর্বর চাষের জমিতে। জমির উপর গাদা ইট ফেলা হচ্ছে। তার উপর চালানো হচ্ছে রোলার। দিনরাত এক করে মাটি কাটার আধুনিক মেসিন উপড়ে দিচ্ছে জমির আল। কৃষক-দরদি সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সভা উপলক্ষে এ ভাবেই একাধিক ফসলি জমিতে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, সভাস্থল।
মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগেই ঘুরে গেছেন বীরভূমে। এসেছিলেন রামপুরহাট মহকুমাতেই। আবার কেন আগমন? প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রামপুরহাট আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সভা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এক ঘনিষ্ঠের ছেলের বৌভাতে যোগ দিতেই মূলত আসছেন বলে জানা গিছে। মুখ্যমন্ত্রীর মামাবাড়ি রামপুরহাটের কুসুম্বা গ্রামের মন্টু দাস খুবই ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই থাকেন তিনি। তাঁরই ছেলের বৌভাত বুধবার। ছেলে কিষান দাস জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলেছেন। আসবেন বলেছেন এতেই আমি চরম খুশি। কতবড় সৌভাগ্য বলুন। তাঁর সৌভাগ্য সংখ্যালঘু নিবিড় এলাকার কৃষকদের কপাল চাপড়ানোর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ, বিয়েতে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী তারাপীঠে পুজো দেবেন, সভাও করবেন একটা।
সেই সভার জন্যই রামপুরহাটরে সানঘাটাপাড়ার ব্রিজ বাইপাসের ধারে থাকা একশো বিঘার বেশি জমিকে ঠিক করেছে প্রশাসন। অধিকাংশ দো-ফসলি। সংখ্যালঘু নিবিড় শ্রীকৃষ্ণপুর-পাখুড়িয়া মৌজা ক্ষুব্ধ। যেমন রুম্বানি বেগম। পৌনে দু বিঘা জমি তাঁর। রবিবার উগরে দিলেন ক্ষোভ, আমার জমি। আমাকে না জানিয়ে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিল। পাম্প বসিয়ে দিল। দশ কাঠা জমিতে সরষে লাগিয়েছিলাম। সব উপড়ে দিল। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করল না। বোরোর বীজতলা থাকা জমি উপড়ে দিয়েছে। আল বলে কিছু নেই। ইটের গুঁড়ি ফেলে জমির শেষ অবস্থা করে দিয়েছে। পাথরের ধূলোর স্তর ফেলে দেওয়া হয়েছে জমিতে। গোটা গ্রামের মানুষ খেপে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে৷