কলকাতা: ভোট প্রচারের অলক্ষ্যে হুহু করে বাড়ছে শাক সবজি-মাছের দাম। লক্ষ্য নেই সরকারের, নেই আগ্রহও। সাধারণ মানুষের নাকাল অবস্থার খবর পৌঁছায় না সরকারের কানে। আসলে দুই মিত্র শাসকের নকল তরজায় এখন মরছেন সাধারণ মানুষ। ভোট এসেছে মহা কলরবে। আর সেই ভোটযুদ্ধের আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছে মানুষের দৈনদিন সমস্যা জর্জরিত জীবন। বেঁচে থাকার সামান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেই একরাশ দুশ্চিন্তা, পকেটে টান। সবজি বাজার থেকে মাছ বাজার-সর্বত্রই আগুন৷
বাজারের ভেতরে ঢুকতেই হাঁকাহাঁকি, দরদামের চিত্র। এক ক্রেতাকে বলতে শোনা গেল, ভালো ফুলকপি তো কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে, যাও বা দু-চারটে পাওয়া যাচ্ছে এক একটা ৩০ টাকা এখন। খেতে ভালো লাগে না। বাঁধাকপিও আর খাওয়া যাচ্ছে না এখন, তাও বিকোচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। এই গরমে এবার ভরসা পটল আর এঁচোড়। তাও ৬০ টাকার নিচে নামল না? ভোট নিয়ে সবাই মাতামাতি করছে, এগুলো কে দেখবে? পটলে হাত দিয়েও তা সরিয়ে নিয়েছিলেন সেই বৃদ্ধ ক্রেতা। বাজারে ৫০ টাকার নিচে তো সবজিই নেই। রাস্তার ধারের চায়ের দোকান থেকে বাসে ট্রামে পাড়ার আড্ডায় এখন একটাই চর্চা— ভোট। বিভিন্ন মিডিয়ার প্রভাবে সেই ভোটচর্চা আরও চড়া মাত্রা পাচ্ছে।
এদিকে হুহু করে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। ৬০ টাকা কেজি পটলের মতোই ঢেঁড়সও ৬০ টাকা। বেগুন ৬০ টাকা, আবার ঝিঙেও ৫০-৬০ টাকা। এঁচড়ও সেই ৫০-৬০ টাকার নিচে নেই। বাজারে বিক্রির জন্য রাখা উচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, কুমড়ো ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে ৪০, পেঁয়াজ ১৫-২০ টাকা, আদা কেজি ১৫০ টাকা কেজি, গাজর এখনও মিলছে যার কেজি ৫০-৬০ টাকা, শশা ৪০-৫০ টাকা, টমাটো ৩০, সজনে ডাটা ৫০, মটরশুঁটি ৫০ টাকা, বিন ৭০, চিচিঙ্গাও ৫০ টাকা, লঙ্কা ১০০ টাকা কেজি, জ্যোতি আলু ১২ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ১৬ টাকা, ক্যাপসিকাম ৮০ টাকা, কেজি হিসেবে নিতে গেলে লাও ৩০ টাকা। মাছের বাহারও তথৈবচ। মিষ্টি জলের ছোট রুই কাতলা ছাড়া বাজারের বেশিরভাগ মাছই ৪০০-৫০০ টাকার ওপরে। একটু ভালো মানের হলে তা ৬০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে।
ঠাকুরপুকুরের সবজি বিক্রেতা রমজান গায়েন বললেন, বিভিন্ন বাজারে একটু কম বেশি নানা রকমের দাম আছে, তবে ‘সব বাজারের অবস্থাই বড় খারাপ। রোজকার বাজার এত দাম দিয়ে কিভাবে কিনবেন মানুষ? ফলে তাঁরা অনেক কম কিনছেন পরিমাণে। আমরাও তো বুঝি, বাজার আমাদেরও করতে হয়।’