আজ বিকেল: ফের মল কালচারের প্রকোপ দীর্ঘদিন ধরে লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে বন্ধ হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী মিত্রা সিনেমা হল। বায়স্কোপওয়ালাদের দুঃখের দিন যেন কাটতেই চায় না। কেউ আর সিঙ্গল স্ক্রিনে ছবি দেখতে আগ্রহী নন, কয়েকবছরে তাই যত ব্লক বাস্টার ছবি আসুক না কেন, দর্শকাসন প্রায় ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে, মাশুল গুনতে হচ্ছিল হলের বর্তমান মালিক দীপেন্দ্র কৃষ্ণ মিত্রকে। ঘরের খেয়ে ক্ষতির মুখ দেখতে তাঁর আর ভাল লাগছিল না, কতদিন আর ঐতিহ্য আঁকড়ে বসে থাকা যায়। তাই সিদ্ধান্তটা নিতেই হল, তালা পড়ল মিত্রার দরজায়।
একেবারে বরাবরের জন্য তালা। শনিবার ছিল শেষ প্রদর্শন, আর কখনওই দর্শকদের জন্য খুলবে না শ্যামবাজারের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়া থাকা মিত্রা। ইতিমধ্যেই হলটি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।খুব শিগগির শুরু হবে ভাঙার কাজ। তারপর সেখানেই গড়ে উঠবে আধুনিক কলকাতার আরও এক শপিংমল। থাকবে, খাওয়া দাওয়া কেনাকাটা ও মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ। বর্তমান প্রজন্ম অন্তত তাই চায়। তাই তো মিত্রাকে ইতি টানতে হল। ৮৮ বছরের ইতিহাস ভুলে মিত্রা যাবে স্মৃতির গর্ভে।শ্যামবাজারের মোড়ি মিত্রার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার কথা মনে করবেন সাতের দশকের কোনও যুগল। কিম্বা, কিশোরীর দল, যারা দলবেঁধে আউটিংয়ে যাওয়ার আগে এখানেই সবাই দেখা করত।
১৯৩১ সালে এই প্রেক্ষাগৃহের পথচলা শুরু। তখন নাম ছিল চিত্রা, পরে ৬৩-তে মালিানা বদল হয়। প্রেক্ষাগৃহটি কিনে নেন জমিদার উত্তর কলকাতার হেমন্ত কৃষ্ণ মিত্র। নাম বদলে চিত্রা হয় মিত্রা। হেমন্তবাবুর বংশধররাই এতদিন হলের মালিকানা ধরে রেখেছিলেন, কিন্তু উত্তরোত্তর আধুনিকতার হাতছানি সেই ধরে রাখার মূল্য দিতে পারল না। বহু ব্লকবাস্টারের সাক্ষী থাকা মিত্রার কপালেও নেমে এল অকাল পরিণতি।