নদীয়া: অতিমারী আবহে থমকে গিয়েছে জীবন৷ শুধু জীবনই নয়, স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে জীবিকাও৷ ভয়াবহ এই পরিস্থিতি কোপ ফেলেছে শ্রমজীবী মানুষের জীবন জীবিকায়৷ লকডাউনে দীর্ঘ সময় ব্যবসা বন্ধ থাকার পর, আশা ছিল একটা সময় হয়তো হাল ফিরবে৷ কিন্তু, না ফেরেনি৷ বরং সময়ের সাথে সাথে আরো জাঁকিয়ে বসেছে অনটন, দারিদ্র৷
রাতদিন পরিস্থিতির সাথে সংগ্রাম করে এই ভাবেই লড়াই করছেন শান্তিপুর ব্লকের বাবলা অঞ্চলের গোবিন্দপুর এলাকার ঝুড়ি শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষজন৷ বাঁশ চিরে তার চাঁছাড়ি দিয়ে তৈরী হয় নানা রকমের ঝুড়ি। এই ঝুড়ির একটা বড়ো অংশ আমের মরসুমে আম বাগানে ব্যবহৃত হয়| তাছাড়াও হাঁস, মুরগী রাখার খাঁচাও তৈরী হয় এই বাঁশের চাঁছাড়ি দিয়ে। গোবিন্দপুরের গণেশ দাস, অনিতা দাস, সুনীল দাসরা বছরের পর বছর ধরে কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। জন্ম থেকেই বাপ-ঠাকুরদাদের এই কাজ করে আসতে দেখেছেন| আজ নিজেরাও এই কাজের সাথে যুক্ত৷
প্রতি বছরই বর্ষার মরশুমে কিছুটা মন্দা চলে ব্যবসা, কিন্তু এবছর করোনার কারনে সেই ধাক্কাটা আরো জোরালো হয়েছে৷ দুবছর আগে পর্যন্ত এক একটা ঝুড়ি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হতো, আজ ৪০ টাকাতেও তা নিতে চাইছেন না মহাজন। কারন, তাদেরও বিক্রি নেই| পেটের দায়ে কম দামেই মহাজনের কাছে ঝুড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। তাতে বাঁশের দামও উঠছে না| মজুরীর তো প্রশ্নই নেই। রোজগার কমেছে, তাই সংসার চালানর খরচও কমাতে হয়েছে৷
পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি পরিবারের মহিলারাও পারিবারিক এই ব্যবসার কাজে হাত লাগান। আগে এই ব্যবসায় লাভের মুখ দেখা গেলেও, গত দু-বছরে পাল্টে গিয়েছে সেইসব। শান্তিপুরের অধিকাংশ মানুষ তাঁতশিল্পের সাথে যুক্ত থাকলেও, স্থানিয়দের অনেকে এইরকম অনেক ছোট ছোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁতশিল্পীদের মত তাদের জীবনও আজ সংকটে। ঘুরে দাঁড়াতে তাই সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন অনুভব করছেন তাঁরা।