কলকাতা: প্রয়াত চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন৷ বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর৷ বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নিজের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন তিনি।
১৯২৩ সালের ১৪ মে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন এই বাঙালি পরিচালক। ১৯৮৩ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। মৃণাল সেনের প্রয়াণে শোকের ছায়া টলিপাড়ায়। ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে যাত্রা শুরু মৃণাল সেনের। স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা পড়াশোনা করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সঙ্গে যুক্ত হন। চল্লিশের দশকে তিনি আইপিটিএর (ইন্ডিয়ান পিপ্লস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ তবে তিনি কখনও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হননি।
তিনি কখনও সাংবাদিক, কখনও বা ওষুধ বিপননকারী এবং চলচ্চিত্রে শব্দ কলাকুশলী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৫৯ সালে ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবিটি তাঁকে পরিচিতি দিলেও তার আগে তিনি ছবি করেছেন৷ তাঁর প্রথম ছবি হল রাতভোর(যদিও মুক্তি পায়নি) ৷ এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার, তখনও তিনি সেভাবে তারকা হয়ে ওঠেননি৷ আবার ১৯৭৬ সালে তাঁর ছবি ‘মৃগয়া’-তে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে আবির্ভাব ঘটে মিঠুন চক্রবর্তীর৷ মৃণাল সেনের শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’ মুক্তি পায় ২০০২ সালে। বাংলা ভাষার পাশাপাশি এদেশের হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। তিনি ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করেন ‘জেনেসিস’ নামে একটি চলচ্চিত্র, যা হিন্দি, ফরাসি ও ইংরেজি তিনটি ভাষায় তৈরি হয়। তিনি ১৯৮১ সালে পদ্মভূষণ লাভ করেন এবং ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ অবধি ভারতীয় সংসদের সাম্মানিক সদস্যপদ লাভ করেন। ফরাসি সরকার তাঁকে কম্যান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস সম্মানে সম্মানিত করেন এবং রাশিয়ার তাঁকে অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ সম্মানে ভূষিত করেছে।