মালদহ: নিজেদের দখলে থাকা রাজ্যের একমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতও হাতছাড়া হল বামেদের৷ কারণ, বাম কংগ্রেস জোটের দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যরা সকলেই যোগ দিলেন তৃণমূলে৷ ফলে বিরোধী শূন্য হল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের মালিওর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত।
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সিপিআইএম পরিচালিত মালিওর-২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তরিনা খাতুন, কংগ্রেস দলের উপ-প্রধান দিলিপ দাস ও কংগ্রেসের পঞ্চায়েতে সমিতির সদস্য গৌতম মহলদার সহ কংগ্রেস দলের দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য এবং সিপিআইএম দলের পঞ্চায়েত সদস্য সহ মোট ছ’জন এবং প্রায় পাঁচ শতাধিক সাধারণ কর্মী এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন৷ মালিওর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট পঞ্চায়েত সদস্য সংখ্যা-৯৷ এতদিন তৃণমূলের দখলে ছিল -৪, কংগ্রেস-৩, সিপিআইএম-২৷ এবার তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করায় পঞ্চায়েত দখল করে নিল তৃণমূল। এদিন হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের দক্ষিণ তালসুর গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে যোগদানকারীদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহম্মদ হজরত আলী।বৃহস্পতিবারের যোগদান কর্মসূচি ঘিরে কার্যত উৎসব মঞ্চে পরিণত হয় তৃণমূলের কার্যালয় চত্বর৷ যদিও নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে এই যোগদান বলে কটাক্ষ কংগ্রেসের৷ যা নিয়ে শুরু হয়েছে কংগ্রেস- তৃণমূলের রাজনৈতিক চাপানউতোর।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক সভাপতি মহম্মদ হজরত আলী বলেন, ‘‘একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যবাসী যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করেছেন, তাতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখে তৃণমূলে যোগদান করেছেন৷ হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের অন্তর্গত ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮ টি তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত ছিল। একমাত্র মালিওর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিআইএম পরিচালিত ছিল। এবার সেটাও আমাদের হয়ে গেল৷’’ যোগদানকারী সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধান তরিনা খাতুন বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উন্নয়নের কাজে সামিল হতে তৃণমূলে যোগদান করলাম ৷’’
কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল মাতিন বলেন, ‘’মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর আসনে দেখতে চাই। মমতা ব্যানার্জির হাত শক্ত করতে এবং তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃনমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম। যদিও কটাক্ষের সুরে জেলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মুস্তাক আলম বলেন, পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এই নির্লজ্জ সরকার একের পর এক পঞ্চায়েত দখল করছে। মালিওর ২ পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে প্রধান বামফ্রন্টের ছিল এবং আমরা কংগ্রেস সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু তৃণমূল পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমাদের দলের এবং সিপিএমের সদস্যদের তৃণমূলে যোগদান করাল৷ এর আগে একই ঘটনা সুলতান নগর এবং মালিওর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ঘটিয়েছে। ওরা তৃণমূলে গিয়ে যদি ভাল থাকতে পারে তাহলে থাকুক।